পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ২২ শ। ঠাকরণদিদি । আমার কথায় বিশ্বাস না হয়, ঠাকরণদিদি ত আর দু-মাস ছ-মাসের তফাৎ নয় । রান্নাঘরে আছেন, ডেকে জিজ্ঞাসা করো। বিধ । আর আমার জিজ্ঞাসা করবার দরকার নাই । ( ঈষৎ হাস্য করিয়া ) ঠাকরণদিদি বা বলেছেন, তা ত মিথ্যা হবার নয় । এই বলিয়া বিধ উঠিয়া গেলেন। দয়ার পর্যন্ত না যাইতে যাইতেই শশিভাষণ তাহাকে ডাকিয়া ফিরাইলেন। কহিলেন, "আজ ত পথক খাওয়া গেল । কাল তোমাদের একটা রান্নাঘর দেবো, আর বিষয়-আশয় পাঁচ জন লোক ডেকে ভাগ ক’রে দেবো ।” বিধ । “লোক ডেকে দরকার কি ? আমি তোমার সঙ্গে বিবাদ করবো না । তুমি ত সব জান । যা আমাকে দেবে, আমি তাই নেবো ।”—এই বলিয়া বিধ্যভাষণ তথা হইতে প্রস্থান করিলেন । প্রমদা এত ক্ষণ চপ করিরা বসিয়া ছিলেন । বিধভষণ চলিয়া গেলে বলিলেন, "দেখ ছ একবার অহংকারটা ? তুমি এক কথা বলেছ, তা নয় দটি মিটি করে তোমার অননয়-বিনয় করকে । তা নয়।” শশিভুষণ উত্তর করিলেন, “ও অহংকার আর ক’দিন থাকবে, শীঘ্রই সব সেরে যাবে ” এই বলিয়া শয্যায় শয়ন করিলেন । অষ্টম পরিচ্ছেদ চিরদিন কখন সমান না যায় ইং ১৮—সালের পৌয মাসের—তারিখে ঠিক দুই প্রহরের সময় যদি কেহ কৃষ্ণনগর হইতে কলিকাতার রাস্তায় হাঁসখালির নিকট উপস্থিত থাকিতেন তাহা হইলে ঐ স্থানের নিকটবৰ্ত্তী এক ব্যক্ষমলে একটি পথশ্রান্ত পথিককে দেখিতে পাইতেন । দীর হইতে পথিকের বয়স চলিলশ বৎসরের ন্যন বোধ হইত না, কিন্তু নিকটে গিয়া দেখিলে তদপেক্ষা অন্ততঃ দশ বার বৎসর কম নিশ্চয়ই বিবেচনা হইত। মস্তকে দটি একটি পক্ক কেশ দেখা যাইত, কিন্ত তাহা বয়োবন্ধিহেতু নহে ৷ মুখশ্ৰী লান ও চিন্তাকল। দেখিবা মাত্রেই জানিতে পারা যাইত, চিন্তায় পথিককে যৌবনেই বদ্ধ করিয়া ফেলিয়াছে। পথিকের পায়ে এক জোড়া পাঁচ সাত জায়গায় তালি দেওয়া জতা । তাহাও ধলায় আবৃত। পায়ের হটি পয্যন্ত ধলি । পরিধান একখানি অধমলিন থানের ধতি, গায়ে একটি তালি দেওয়া জামা । জামাটি পাবে পশমী কাপড়ের ছিল, কিন্তু কালে দদশাবশতঃ লোমহীন হইয়াছে । জামার উপর একখান তেহাতা মাকিনের চাদর । পথিকের দক্ষিণ পাবে একটি জলশন্য হকা, একটি কলিকা ও একগাছি বাঁশের ছড়ি ধরাতলে নিপতিত রহিয়াছে । “চিরদিন কখন সমান না যায় ।" বিধভযেণ বনেও জানিতেন না যে, তিনি