পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৪২ শ। আমার নিজের আহারের জন্য ভাবি না। ছেলেটা আর মেয়েটা আছে, তারা পাছে ঘরে চাল থাকতে মারা যায় । প্রমদা গাভীযf্য অবলম্বন করিয়া উত্তর করিলেন, “পরকে দিয়ে কি কাজ চলে ? কাল মাকে আনবো । আমি কষ্ট পাচ্চি শনলে তিনি অবশ্যই আসবেন । তা হ’লেই তোমার ভাবনা চকে গেল ” প্রমদার কথা শুনিয়া শশিভাষণ যেন মহত্তমধ্যে জড় পদার্থের ন্যায় হইলেন এবং কি বলিতেছেন, না টের পাইয়া কহিলেন, "কেনই বা বিধকে পৃথক করিয়া দিলাম ?" কারণ, প্রমদার মাকে আনা যে সহজ ব্যাপার নহে, শশিভাষণ ইতিপবেই তাহ বিলক্ষণ অবগত ছিলেন । প্রথমতঃ মা আসিবেন, পরে বৈকালে প্রমদার ভ্রাতা আসিবেন । তাঁহাকে কাজে কাজেই আসিতে হইবেক । তিনি বাটী থাকিলে তহিকে কে রাধিয়া দিবে ? পর-দিবস সয্যেদেব না উঠিতে উঠিতে প্রমদার মামা আসিবেন ; তিনি একাকী নিজন পরীতে থাকিতে ভালবাসেন না। শশিভুষণ যেন নিমেষের মধ্যেই এ সমস্ত পয্যালোচনা করিয়া কহিলেন, "কেনই বা বিধকে পৃথক করিয়া দিলাম ?" প্রমদা কিঞ্চিৎ কুদ্ধ হইয়া কহিলেন, “তুমি পথিক করিয়া দিলে,তুমিই তার কারণ জান । আমি পথক ক’রে দিইনি, তার কারণও জানি নে ৷” শশিভাষণ কিছু উত্তর করিলেন না। চপ করিয়া ভাবিতে লাগিলেন । প্রমদা বলিয়াছেন, মাকে আনিলে আর ভাবনা থাকিবেক না ; সেই জন্যই বঝি শশিভাষণ যত ভাবনা, অগ্ৰেই ভাবিয়া রাখিতেছিলেন । প্রমদা শশিভযেণকে চিন্তায় মগ্ন দেখিয়া বলিতে লাগিলেন, “কেনই বা বিধকে পথক করিয়া দিলাম ? কেন দিয়াছিলে, তা তুমিই জান । আমার কি দোষ ? আমি ত তখনই বলেছিলাম, আমাকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দাও । এখনও বলছি । দাও, আমাকে বাপর বাড়ী পাঠিয়ে দাও । তোমরা একত্র হও । কত লোকে তাও ত হয়। একবার পথক হইলেই ধে জন্মের মত পথক হয়, তাও ত নয় ।" প্রমদার কথা শুনিয়া শশিভুষণের চৈতন্য হইল । বঝিতে পারিলেন, অপরাধ হইয়াছে। প্রকাশ্যে কহিলেন, “আমি ত আর কিছু বলি নি, কেবল-" প্র । কেবল কি ? আমি তোমার ও বাঁকা-চরা কথা বুঝিতে পারি না । যা বলবার হয়, একেবারে বলে ফ্যালো । আমি ব’কৈ মরি শুদ্ধ তোমারই ভালর জন্য বৈ ত নয় । আমার কি ? আমি এখানে থাকলেও ত ম চারটি না দিয়ে আর থাকতে পারবে না, সেখানে গেলেও তারা আমাকে ফেলে খেতে পারবে না । বোধ হয়, বাপের বাড়ীর কথা লইয়া পৰেব কি হইয়া গিয়াছিল, প্রমদার তাহা স্মরণ ছিল না । সে কথা মনে থাকিলে আর বাপের বাড়ীর নাম করিতেন না ; কিন্ত শশিভাষণ তাহা বিস্মত হন নাই । এ জন্য তিনি আর সে বিষয় সম্বন্ধে কিছু কহিলেন না। ক্ষণকাল উভয়েই নীরবে থাকিয়া শশিভাষণ জিজ্ঞাসা