পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৪৪ পয'ত কেশে আবত গলাটি লম্বা, পা দুখানি কলার মত, লেখাপড়া সম্বন্ধে মা-সরস্বতীর বরপত্র বলিলে হয়। প্রমদার মা সে জন্য বড় দুঃখিত। যখন তখন কহিতেন, “যারা লেখাপড়া শেখাবে, তারা ডেকেও জিজ্ঞাসা করে না, তবে আর কেমন ক’রে গদাধরের বিদ্যা উপাত্তজন হবে।” প্রমদার মাতার বিবেচনায় গদাধরকে লেখাপড়া শেখান প্রমদার একটি অবশ্যকতব্য কৰ্ম্ম । আর একটি কথা বলিলেই গদাধরের রুপ গণের সমুদায় পরিচয় দেওয়া হয় অথাৎ তিনি "ত"-বগ উচ্চারণ করিতে পারিতেন না এবং তৎপরিবত্ত্বে "ট"-বগা প্রয়োগ করিতেন । সন্ধ্যার পর বাটী আসিয়া বিপিনকে দেখিয়া কহিলেন, “কি বিপিন, টমি কি মনে ক’রে ? কখন এলে ?” : বিপিন উত্তর না দিতেই গদাধরের মাতা কহিলেন, “তুমি এমন সময় কোথায় গিয়াছিলে, গদাধরচন্দ্র ?” প্রমদা ও প্রমদার মা উভয়েই গদাধরচন্দ্র বলিয়া ডাকিতেন, কখনই তাহার অন্যথা হইত না। পাড়ার লোকে কিন্তু “গদা" ছাড়া আর কিছুই বলিত না । “তুমি কোথায় গিয়াছিলে গদাধরচন্দ্র ? দেখ দেখি, বিপিন এসেছে—কি খাবে, কি হবে, তার কোন উদ্যোগ করলে না, লোকে কি বলবে বল দেখি ?" গদাধর উত্তর করিলেন, “আমি কোটায় গিয়েছিলাম, টাটে টোমার কাজ কি ? আমি কাজে ছিলাম। বিপিনের খাবার ভাবনা কি, আমরা যা খাই, বিপিনও টাই খাবে। এ টো বিপিনের পরের বাড়ী নয় । বিপিন বিপিন, টামাক খেয়েছ ?” বিপিন। আমি তামাক খাই নে । গদা । টমি খাও না, আমরা টো খাই । মা, একটা তামাক সাজ । গদাধরচন্দ্র আদরের ছেলে । নিজ হাতে কখন তামাক সাজিয়া খান নাই । তাঁর মাতা খাইতে দিতেন না ; তামাকের পিপাসা হইলে তিনি নিজে সাজিয়া দিতেন । গদাধরের মা তামাক সাজিতে আরম্ভ করিলে গদাধর ইত্যবকাশে জিজ্ঞাসা করিলেন,--“বিপিন, টবে কি মনে ক’রে এসেছ ?” বিপিন । দিদিমাকে নিতে এসেছি । গদাধর সহাস্য বদনে কহিলেন, “মা শািনলি, টাই যে সে ডিন বোলছিলি, প্রমডার ডয়া মায়া নেই, কখন ডেকেও পাঠায় না আর খরচপট্র ড়েয় না । এই ড্যাক, ডেকে টো পাঠয়েছে।" বিপিনের সম্মখে গদাধর এরপে বলায় গদাধরের মা কিঞ্চিৎ বিরক্ত হইয়া কহিলেন,—“গদাধরচন্দ্র, তোমার কি এ জন্মেও বন্ধি হবে না ? আমি কবে ও কথা বলেছিলাম ?” গদাধর। আমার বডি নেই, টোমার টো আছে, টা হলেই আমার হবে। কিণ্ট তোমার মনে ঠাকে না, এই একটা ডোষ । সে ডিন টমি এক কটা বোলে, আজ বলো না —এই সময়ে গদাধরের মা তামাক সাজিয়া গদাধরকে হ'কো দিলেন,