পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৫ • গদাধরের বিশ্বাস ছিল, তিনি গেলেই আর কেউ আসে না-আসে, সেই কনটেবল ত আসবেই, তা হ’লেই শ্যামা জব্দ হবে । দৌড়িয়া থানায় গেলেন। দেখিলেন— দারোগা কি বলিয়া দিতেছেন, আর তাঁহার আলাপী কনটেবল তাই লিখিয়া লইতেছে । গদাধর গিয়া কহিলেন, “ডারগা মহাশয়, ডারগা মহাশয়, শ্যামা আমার নাক কান কাটটে চায় ?" দারোগা কহিল, “তুমিই বা কে, আর শ্যামাই বা কে ?” গদাধর । আমি শশী বাবর শালা । দারোগা । তোমার বাপের নাম কি ? গদাধর । টা বলে চিটে পারবে না। শ্যামা ডাসী আমার সঙ্গে ঝগড়া ক’রে অামার নাক কান কেটে ডিটে চায় । দারোগা কনটেবলের দিকে চাহিয়া কহিলেন, ‘রমেশ, একে তুমি চেন ?"— কন টেবলের নাম রমেশ । রমেশ গদাধরের কল, শীল, বিদ্যা, বদ্ধির পরিচয় দিল। দারোগা শনিয়া কহিলেন, “ভাল, তোমাব মকদ্দমা কছি, এত বড় অন্যায়—তোমার নাক কান কাটতে চায়।” গদাধর । অন্যায় না, বড় অন্যায় । আপনি এর একটা সবিচার করুন । দারোগা কহিলেন, “আচছা তা করছি । কিন্তু তোমার নাক কান কেটেছে, না শুধ, ব'লেছে কাটবো।" গদাধর হঠাৎ কানে হাত দিলেন । দারোগা কহিলেন, "হাঁ, আগে ভাল ক’রে দেখ ; দাবি প্রমাণ করা চাই ।” গদাধর কহিলেন, “কাটে নাই, কিট ব'লেছে কাটবো।" দারোগা । একটা স্ত্রীলোক বলেছে তোমার নাক কান কাটবে, তাই তুমি দৌড়ে থানায় এসেছ ? তোমার লজা করে না ? গদাধর। সে টেমনি ট্রীলোক বটে। সে টো ট্রীলোক নয়, সে ট্রীলোকের বাবা। যে ব’টি টলেছিল, যডি ডেখটে, টবে বাপ বাপ বাপ করে টমিও পালাটে । দারোগা । সত্তি না কি ? তবে ত তাকে জব্দ করা উচিত। তমি এক কাজ কর । ফিরে যাও, গিয়ে ঝগড়া কর । তোমার কান কেটে দিক আগে, নৈলে ত মকদ্দমা হবে না ? গদাধর । আগে যডি কান কেটে ডেবে, টবে আমি কি ল’য়ে নালিস করবো ? দারোগা । কেন, এক কান নিয়ে ? গদাধর বঝিতে পারিল, দারোগা ঠাট্টা করিতেছেন। তখন রাগত হইয়া কহিল, “আচ্ছা, টমি আমার মকন্ডমা না কর, আমি জেলায় যাব।” দারোগ কহিলেন, “সেই ভাল। এ সব বড় মকদ্দমা এখানে হয় না।”