পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ : ৫১ গদাধর উঠিয়া যাইতেছেন। দারোগা কনটেবলকে কহিলেন, “একটা মজা করবো দেখবে ?" •. কনস্টেবল কহিল, “কি মজা ?” দারোগা অন্য একজন কনটেবলকে কহিলেন, "হরি সিং, এই লোকটিকে গারদে দাও ত । ও মিথ্যা এজেহার দিতে এসেছে ।” হরি সিং আজ্ঞা প্রাপ্ত মাত্র গদাধরের হস্ত ধারণ করিয়া গারদে লইয়া গেল । গদাধর রাগত হইয়া বলিলেন, “টোমরা টের পাও নাই আমি কে ? ঠাক, টোমাডের মজা ড্যাকাবো ; আমি শশী বাবরে শালা, টা টোমরা জান ? আমাকে গারড়ে ডেওয়া সোজা কঠা নয় ।” কনস্টেবল কহিল, “তুমি ঠাকর যা করতে পার, ক’রো । আমার কি ? আমি ত হািকম মেনেছি। মোন্দা তুমি আর বেশী কথা কইও না। দারোগা বাব বললেন, বেশী কথা কইলে হাতকড়া লাগাতে হবে ।” শুনিয়া গদাধরের ভয় হইল, না জানি আবার হাতকড়া কি। তখন কনটেবলের পায় পড়িতে লাগিল। "হরি সিং, টোমার পায় পড়ি, আমাকে ছেড়ে ডেও।” হরি সিং কহিল, “আমার ছেড়ে দেবার কি ক্ষমতা ?” গদাধর । টবে একবার রমেশ বাবকে ডেকে ডেও । কনটেবল ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “রমেশ বাব আসতে পারে না।” গদাধর । “আমি রমেশ বাবরে এটো কলাম, আর রমেশ বাব আমার সঙ্গে একবার ডেকা করলেন না ।" গদাধর এই প্রকার ক্ৰমাগত কখন খোশামোদ, কখন রাগ প্রদশর্তন করিয়া পরে সন্ধ্যাবেলা উচ্চৈঃস্বরে রোদন আরম্ভ করিল। তখন দারোগা গারদে গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন, তুমি আর মিথ্যা মকদ্দমা করবে ?” গদাধর । না । “সত্ৰীলোকের সঙ্গে ঝগড়া করবে ?” গদাধর । না । “তিন হাত মেপে নাকখত দাও, তবে যেতে পাবে।' গদাধর নাকে খত দিয়া প্রস্থান করিলেন । গদাধরচন্দ্র থানায় গেলে ক্ষণকাল পরে শশিভাষণ বাটী আসিলেন । অন্যান্য দিন অপেক্ষা সে দিন সকালে কাছারি বন্ধ হইয়াছিল । বাটী আসিয়া প্রমদাকে রাগত দেখিয়া কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন । প্রমদা আন পখিবাক সমুদায় বলিলেন, কেবল প্রথমতঃ তিনিই যে ঠাট্টা করিয়াছিলেন, সেইটকে বাদ দিলেন । শশিভাষণ শনিয়া প্রথমতঃ চটিয়া উঠিলেন। সংযোগ বঝিয়া প্রমদার মাতাও আবার এই সময়ে দুই একটি টিপনী করিলেন। কিন্তু শশিভাষণ রাগ করিয়া শ্যামার কি করিবেন ? তাহাকে ধরিয়া মারিতেও পারিবেন না, কিবা এই কথা লইয়া মকদ্দমাও করিতে পারেন না । সাত পাঁচ ভাবিয়া চপ করিয়া বসিয়া রহিলেন ।