পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষোড়শ পরিচ্ছেদ : ৫৫ কাজ করতে পারি? এখন তোমার বিবেচনায় কি হয় বলো ৷” প্রমদা । আমার বিবেচনা নিয়ে তুমি কি করবে। তোমার বাড়ী, তোমার বা খশী তাই বরো। ’ শশীভুষণ কথার ভাব বুঝিয়া অত্যন্ত ভীত হইলেন। ব্যস্তসমস্ত হইয়া কহিলেন, "আচ্ছা, আজ এ কথা এই পৰ্য্যন্তই থাক, আর এক দিন হবে । দু-দিন থাকলে বাড়ীটে আর পচে যাবে না।" ষোড়শ পরিচ্ছেদ নীলকমল কত্ত্বক অদৃষ্টের ফলাফল বর্ণনা পাঠক মহাশরের মরণ থাকিতে পারে, আমরা বিধভাষণ ও নীলকমলকে এক মদীর দোকানে রাখিয়া অন্যান্য বিষয় বর্ণনা করিতে গিয়াছিলাম । তাঁহারা সে রাত্রি সেই মদীর দোকানেই ছিলেন, তাহাও জানেন । পরদিবস প্রত্যুষে গাত্ৰোখান করিয়া মদীর দোকান হইতে পুনরায় কলিকাতার পথে চলিলেন । ক্ষণকাল গমন করিয়া উভয়ে এক বক্ষমলে শ্রান্তি দর করিবার মানসে উপবেশন করিলেন । পৰবদিবস নীলকমল ক্ৰমাগতই গান করিয়াছিল। অদ্য নীলকমলের মুখে কথা নাই । যে সৰবদা বকে, তাহাকে চিন্তাকল দেখিলে তাহার সমভিব্যাহারী লোকের মনে এক প্রকার কন্ট অনভত হয়। বোধ হয় তাহা সকলেই জানেন । বিধ ভাষণের মনেও কষ্ট হইতেছিল । কিন্তু কথা কহিতে গেলেই পাছে নীলকমল গান ধরে, এই ভয়ে এত ক্ষণ কথা কন নাই ; বক্ষমতলে বসিয়া তামাক খাইতে খাইতে বিধুভুষণ জিজ্ঞাসা করিলেন, "নীলকমল কি ভাবছ ?” y নীলকমল কথা কহিল না । বিধ ক্ষণকাল চপ করিয়া পরে আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘নীলকমল কি ভাবছ ?” নীলকমল কথার জবাব না দিয়া একটু পরে জিজ্ঞাসা করিল, "দাদাঠাকুর, ( নীলকমল এই অবধি বিধুভুষণকে দাদাঠাকুর বলিয়া ডাকিতে আরম্ভ করিল ) যে সাহেবেরা খ্রীস্টান করেন, তারা যা বলে, সব কি সত্যি ?" বিধভযেণ কহিলেন, “কি বলে তা না শুনলে কেমন ক’রে বলবো ?" "এই যে তারা বলে, খ্রীস্টান হ’লে মেম দেবে, তা কি যথার্থই দেয় ?" বিধ হাসিয়া উত্তর করিলেন, "কেন ? যদি দেয়, তা হ’লে তুমি গ্রীষ্টান হবে नां किं ?” নীলকমল কহিল, “হ’তে ত ইচ্ছা করে, কিন্তু জাত যাবে যে ? আচ্ছা, বেহ্মজ্ঞানী হ’লে কি তারা বিয়ে দিয়ে দেয় ?” বিধ কহিলেন, “তা ত আমি বলতে পারি নে।"