পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তদশ পরিচ্ছেদ : ৫৯ দিন জিনিস কিনলে আর তিন দিন কিনতে হয় না। বিধভাষণ কহিলেন, “কোথা থেকে খন্দের হয়, একট: পরে দেখতে পাবে। আমি আর এখন বকতে পারি না ।" উভয়ে ক্ষণকাল মৌনভাবে চলিয়া নীলকমল জিজ্ঞাসা করিল, “এখন বলো দাদাঠাকুর, কোথা থেকে খন্দের হয় ?” বিধ কিঞ্চিৎ রাগত হইয়া কহিলেন, “বললাম এখনকার সময় নয়, তব: জিজ্ঞাসা করবে ? অমন কর ত আমি কিছুই বলবো না ।” আবার অনেক ক্ষণ চপ করিয়া গেল। কলিকাতার যতই নিকটবৰ্ত্তী হইতে লাগিল, ততই লোকের সমারোহ বেশী দেগিয়া নীলকমল জ্বিজ্ঞাসা করিল, *আচ্ছা দাদাঠাকুর, এত লোক কোথায় যাচ্ছে ? বোধ হয় কোন জায়গায় যাত্রা হচ্ছে ।" বিধ । হাঁ, যাত্রা হচ্ছে না তোমার মাথা হচেছ । দেখতে পাচছ না, প্রায় কলিকাতায় পৌছিলাম। এখানেও লোক হবে না ত কোথায় হবে ? নীল । এত লোক কি সকলেই কলিকাতায় যাচেছ ? বিধ । হাঁ । নীলকমল আবার খানিক চপ করিয়া থাকিল । শ্যামবাজারের নিকটবত্তী হইয়াছে । একখানা ঘোড়ার গাড়ী আসিতেছে দেখিয়া নীলকমল বলিয়া উঠিলেন, "দাদাঠাকুর, হ্যাদে দেখ, এ আবার একটা কি ?” বিধভষেণ হাসিয়া কহিলেন, “নীলকমল, তুমি কখন গাড়ী দেখ নি ?" নীল । দেখবো না কেন ? রহিম ঘরামীর গাড়ী দেখেছি, আর আর কত লোকের গাড়ী দেখেছি । বিধ । সে ত গরুর গাড়ী। কখন ঘোড়ার গাড়ীর নাম শোন নি ? নীল । এরি নাম ঘোড়ার গাড়ী ? বিধভষেণ উত্তর করিলেন, “হাঁ । কেন, তুমি কি কৃষ্ণনগর যাও নাই ? সেখানে কত ঘোড়ার গাড়ী আছে।" নীলকমল কহিল, “আমি ভাবতাম, ঘোড়গাড়ী আর গরুর গাড়ী এক রকম, এতে গর যোড়ে, ওতে ঘোড়া যোড়ে । এ দেখি একখান পালকির মতন, তা কেমন ক’রে টের পাব ?" এই বলিতে বলিতে উভয়ে শ্যামবাজারের পল পার হইল। নীলকমল পল পার হইয়া দেখে, কতকগুলি গাড়ী যাচ্ছে। অত্যন্ত আহলাদিত হইয়া কহিল, "দাদাঠাকুর, হ্যাদে ডান দিকে দেখ, কত ঘোড়াগাড়ী। বাপ রে ?” নীলকমলের চোখ আর রাস্তার দিকে নাই ; ক্ৰমাগত এ-দিক ও-দিক দেখিতেছে, এমন সময় একখানা গাড়ী আসিয়া তাহার গায়ে পড়িবার জো হইল । গাড়োয়ান “হট যাও” বলিয়া হাতের চাবক বারা নীলকমলকে প্রহার করিল। নীলকমল হঠাৎ সম্মখে দটি নিক্ষেপ করিয়া দেখিল, গাড়ী তাহার উপর চড়িবার