পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিংশ পরিচ্ছেদ : ৬৯ সরলা টাকা স্থানান্তরে রাখিয়া ঠাট্টা করিতেছেন । এ জন্য সরলাকে কহিল, "খড়েী-মা, আমার সঙ্গে চালাকি ?” সরলা কহিলেন, “সে কি শ্যামা ?” শ্যামা। ইং—উনি কিছ জানেন না আর কি ? সরলা কহিল, “শ্যামা, যথার্থই আমি কিছ জানি নে ৷” শ্যামা সরলার মাখ দেখিয়া ব:ঝিতে পারিল, সরলা যাহা বলিয়াছেন, যথাৰ্থ । তখন কহিল, “তুমি ত টাকা কোন জায়গায় রাখ নাই ।” সরলা কহিলেন, “আমি ত দু-তিন দিন হ’ল সিন্দকের কাছেও যাই নি ।” শ্যামা কহিল, “তবে যথার্থই টাকা চোরে নিয়েছে।” উভয়ে বামতসমস্ত হইয়া সিন্দকের মধ্যে অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন । টাকা কোথাও নাই । সরলার মুখ শাখাইয়া গেল। কপালে ঘৰ্ম্ম বহিতে লাগিল । কাতর সবরে কহিলেন, “শ্যামা উপায় ?” শ্যামা কহিল, "আর কিছ না, ঐ বিটলে বামন নিয়েছে । এ গদার কম । এত দিন না, তত দিন না, হঠাৎ ও পরশ বাড়ী গেল কেন ? ও-ই টাকা চরি ক’রে নিয়ে রেখে আসতে গিয়েছিল । এখন আমার মনে হ’ল, ওরা সে দিন সকলে ফিস ফিস ক’রে পরামর্শ করছিল, আমি ওদের বাড়ীর দিকে গেলাম, তখন চে'চিয়ে কথা কইতে আরম্ভ করলে । চললাম আমি থানায়, ও কেমন বামন আমি দেখবো ।” এই বলিয়া শ্যামা গহমধ্য হইতে বাহির হইল। প্রমদা, গদাধর ও গদাধরের জননী এ দু-দিবস ক্রমাগত চৌকি দিতেছিলেন কখন টের পায় । আপাততঃ সরলার গহে উচ্চ কথা শুনিয়া পরস্পর তিন জনে হাসিতে লাগিলেন । শ্যামা বাহির হইয়া কহিল, “আমি টের পেয়েছি, কে টাকা চরি করেছে ? এ সব গদাধরের কম । সে দিন বাড়ী গেল, যেন কেউ টের পেলে না আর কি ? এখন আমি বলছি, ভাল চাও ত টাকাগুলি দাও, না দিলে আমি থানায় খবর দেবো । আমি কাউকে ছেড়ে কথা কবো না । ধাড়ি বাচছ সকলেরই নাম ক’রে দেবো ।” গদাধর বাহির হইয়া কহিল, “কি টই বকবক করছিস ? কে টোর টাকা নিয়েছে ? ফের বডি টই চোর বলিস, টবে আমিই টোকে ঠানায় নিয়ে যাব ।” শ্যামা । তোর আর আমাকে থানায় নিয়ে যেতে হবে না । সে দিন গিয়েছিলি না থানায় ? কি কলি গিয়ে ? গদাধর মনে করিল, শ্যামা তাহার বিদ্যা টের পাইয়াছে, পাছে বেশী কথা কহিলে সমুদায় প্রকাশ করিয়া দেয়, এই ভয়ে ঝগড়া ত্যাগ করিয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিল। শ্যামা বলিতে লাগিল, “এই আমি চললাম। আমি কাহারো উপরোধ করবে না। ঘরে পলিস এনে খানাতল্লাসি ক’রে তবে ছাড়ব ।" শ্যামা