পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ২ বিধার বিবাহের পর তাঁহার মাতা পাঁচ বৎসর বাঁচিয়াছিলেন। এ পাঁচ বৎসরের মধ্যে শশিভাষণের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ও বিধভষেণের একটি ছেলের জন্ম ভিন্ন, এ স্থানে উল্লেখের যোগ্য আর কোণ ঘটনাই উপস্থিত হয় নাই। এ জন্য আমরা এইখানেই এ অধ্যায়ের শেষ করিলাম । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ মনোহাবীর দোকান গ্রন্থকারেরা লোকের মনের কথা টের পান এবং ইচ্ছা হইলে সকল স্থানেই গমনাগমন করিতে পারেন । নহিলে সন্দর বকলতলায় বসিয়া কি ভাবিতেছিলেন, ভারতচন্দ্র রায় তাহা কি প্রকারে জানিতে পারিলেন ; এবং মাইকেলই বা কি প্রকারে পরলোকের বক্তান্ত অবগত হইলেন ? এবং তদপেক্ষাও দগম যে মসলমানের অন্তঃপর, বঙ্কিম বাব কি প্রকারে তথায় উপস্থিত হইয়া ওসমান ও আয়েসার কথোপকথন শুনিতে পাইলেন ? এ ভিন্ন গ্রন্থকারদিগের আরও একটি শক্তি আছে, অথাৎ ইচ্ছা হইলেই অসম্ভবকে সম্ভব করিতে পারেন। এটি বড় সাধারণ শক্তি নহে । এ শক্তি না থাকিলে অনেক গ্রন্থকার মারা যাইতেন । বিষ্ণশমা ত একেবারে বোবা হইতেন । কিন্ত এই শক্তিটি ছিল বলিয়াই, লঘপতনক ন্যায়শাস্ত্রের বিচার করিতেছে এবং চিত্রগ্রীব অবোধ কপোতদিগকে উপদেশ দিতেছে । এই শক্তির প্রভাবেই বঙ্কিমবাব আড়াইশত বৎসব পাবে এক যবনতনয়ার মুখ হইতে অধনাতন ইউরোপীয় সসভ্য জাতীয় কামিনীগণের ভাষা অবলীলাক্রমে নিগত করাইয়াছেন। এ কথা আমাদিগের বলিবার প্রয়োজন এই যে, এই গ্রন্থে উত্তরোত্তর যে সকল বিষয় বণনা করিব—তাহা, হে পাঠকবগ ! আপনাদিগের পাথিবি কণা ও চমচক্ষর অগোচর হইলেও অমলক নহে । আমরা আপনাদিগের অপেক্ষা সহস্ৰ সহস্র গণ অধিক দেখিতে ও শনিতে পাই । অতএব সে সমুদায় অবিশ্বাস করিবেন না। এ অধ্যায়টি পাঠ করিবার সময় পাঠকবগকে বঝিয়া লইতে হইবে যে, শশী ও বিধভযেণের মাতার কাল হওয়া অবধি চারি পাঁচ বৎসর অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে ; এবং বালক-বালিকাগুলিও পাঁচ সাত বৎসরের হইয়াছে । এক্ষণে তাহারা দৌড়াদৌড়ি করিয়া বেড়ায় ও ইচ্ছামত নানাবিধ পতল গড়াইয়া খেলা করে। দাস দাসীর সঙ্গে হাটে বাজারে যায় ; এবং প্রয়োজনমত পাড়ার অন্যান্য বালক-বালিকাদিগের সহিত বন্দব বিবাদাদিও করিয়া থাকে । যত দিন শশী ও বিধভষেণের মাতা জীবিত ছিলেন, তত দিন দুটি ভাইতে যৎপরোনাস্তি সম্ভাব ছিল । ছোটটি বড়টিকে হিংসা করিত না, এবং বড়টিও ছোটটির প্রতি ককাশ ব্যবহার করিত না । কিন্ত তাহাদিগের মাতার পরলোক গমনের পর শশীভুষণের স্ত্রী স্বামীকে পল্টরপে বুঝাইয়া দিলেন যে, এক