পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বাবিংশ পরিচ্ছেদ : ৭৭ নীলকমল রামেশ্বর বাব রামেশ্বর বাব মুখস্থ করিতে আরম্ভ করিল। রামেশ্বর বাবর নাম মুখস্থ করিয়া নীলকমলের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, কা’র যাত্রা হইতেছে, এটি নিশ্চয় করা। নিকটস্থ একজন লোককে দু-বার জিজ্ঞাসা করিল, কিন্ত উত্তর না পাইয়া তার গা টিপিল । টিপটি বড় সহজ টিপ নয়। টিপ খাইয়া সেই লোকটি “উঃ, কে রে” বলিয়া নীলকমলের মখের দিকে চাহিল । ” নীলকমল তাহার কানের কাছে মুখ লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কা’র যাত্রা হচ্ছে ?” সে কহিল, "তা কি লোকের গা না-টিপে জিজ্ঞাসা করলে হয় না ?” নীলকমল কহিল, "এত চটো কেন ভাই ! যদি তোমার ব্যথা লেগে থাকে, তুমি আমাকে নয় একটা টিপ দাও।” 瀛 “গোল মং কারো গোল মৎ করো" একজন খোট্ট দাঁড়াইয়া কহিল । নীলকমলের আর কাহারও কাছে জিজ্ঞাসা করিতে সাহস হয় না । এমন সময় দ জন লোক গান শনিয়া উঠিয়া যাইতেছে । নীলকমলের নিকটবৰ্ত্তী হইয়া একজন অপর জনকে কহিল, "আর গোবিন্দ অধিকারীর সে কাল নাই।" নীলকমল যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাইল । তখন তাবিতে লাগিল, “গোবিন্দ অধিকারীর সঙ্গে ত আমার আলাপ আছে । একবার চোকচকি হ’লে হয় । তা হ’লেই আমাকে ডাকবে, আর আমি আসরে গিয়ে বসবো । এ ব্যাটার গায়ে হাত দিয়ে ডেকেছি বলে চটে গেল, আসরে গিয়ে ব’সলে ব্যাটা টের পাবে—আমি একজন যে-সে নই।" এইরুপ চিন্তা করিয়া নীলকমল এক বার ডান দিকে চেয়ে থাকে, এক বার বা দিকে বেকে চেয়ে থাকে, কিন্ত: চোকচকি আর হয় না। অগ্নে যাইবারও আর জো নাই । নীলকমল এক স্থানে দাঁড়াইয়া ক্ষণেক এ দিক, ক্ষণেক ও দিক বে'কিতেছে, এমন সময় যাত্রা ভাঙ্গিয়া গেল । সকলে বাহিরে যাইতে লাগিল, গোল অনেক চকিয়া গেল । নীলকমলের অভীষ্ট সিদ্ধ হইল, নীলকমল আসরে গিয়া বসিল । ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ আশা মরীচিকা বিধভষেণ কিয়ৎকাল কালীঘাটে থাকিয়া তিনিও যাত্রার দলের অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন । কিন্ত যেখানে যান, সেইখানেই শনেন, হয় ত তাহাদের বাদ্যকরের দরকার নাই, অথবা ভাল বাদ্যকরের বেতন দিবার ক্ষমতা নাই । কালীঘাটে যদিও আহারের ভাবনা নাই বটে, কিন্ত বিধভষেণের বস্ত্রাদি এরপ মলিন হইয়া গেল যে, তাঁহার আর কোন পথানে যাইবার জো রহিল না। তাঁহার পাণ্ডা-বন্ধ তাঁহাকে তাহার নিজের ব্যবসা গ্রহণ করিতে উপদেশ দিল । কিন্ত, বিধভাষণ নতন লোক, সকল থান ভাল করিয়া চিনেন না। অধিকন্ত কালীঘাটে থাকিয়া মিথ্যা কথা বলা ও প্রবঞ্চনা করা অপেক্ষা অধিক পাপ আর