পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষড়বিংশ পরিচ্ছেদ : ৯১ স্বাক্ষরিত রাসদ দেখিয়া মনে করিতেন, টাকা সরলার হতেই পতিত হইতেছে। গোপাল ছেলেমানষে, ভাল করিয়া লিখিতে শেখে নাই বলিয়াই তাঁহাকে পত্র লেখে না । বিধভষেণের প্রথম চিঠি গদাধরচন্দ্রের হতে পতিত হয়। গদাধরচন্দ্র চিঠিখনি খলিয়া নোট দেখিতে পাইয়া অমনি প্রমদার নিকট গিয়া জানাইলেন। প্রমদা । তাঁহাকে রসিদ সই করিয়া চিঠিখানি রাখিতে পরামর্শ দেন । গদাধর নিজ নাম স্বাক্ষর করিয়া পত্র রাখিবেন সিথর করিয়া বাহিরে আসিলেন । নোট পাইয়া গদাধরের আর আহলাদের সীমা নাই । বাহিরে আসিয়া দেখিলেন, তাঁহার পরম বন্ধ রমেশ বাব আসিয়াছেন । গদাধর অবিলবে রমেশ বাবর-নিকট চিঠিখানি দেখাইয়া প্রমদার উপদেশের কথা কহিলেন । রমেশ গোপালের নাম লিখিয়া দিতে পরামর্শ দিলেন । গদাধর সেই পরামশের বশবৰ্ত্তী হইয়া গোপালের নাম লিখিয়া দিলেন । বিধুভুষণ কখন গোপালের হস্তাক্ষর দেখেন নাই । তিনি সই দেখিয়া মনে করিলেন, ‘এই গোপালের লেখা " গদাধরের সহিত রমেশের প্রণয় এই ঘটনা অবধি ঘনীভত হইতে লাগিল । এই প্রণয়ের উপর নিভর করিয়াই শ্যামার নামে নালিশ করিতে গিয়াছিলেন । রমেশ যথার্থই পলিসের লোক । অপর লোক উপস্থিত থাকিলে গদাধরের সহিত এরুপ কথাবাত্ত কহিতেন যে, সহজে কেহ বুঝতে পারিত না যে, তাঁহাদের সহিত বড় অধিক প্রণয় আছে । যত বার রেজেণ্টরী চিঠি আসিয়াছে, গদাধর হস্তগত করিয়াছেন । গদাধরেরা পরাতন বাটী হইতে নতন বাটীতে আসিলে রমেশ হরকরাকে নতন বাড়ী দেখাইয়া বলিয়া দেয়, “ঐ বাড়ীতে সরলা থাকেন।" ডাকমন্সী ও খোয়াড়-রক্ষক এক ব্যক্তিই । সে থানায়ই থাকিত, সতরাং যখন রেজেস্টরী চিঠি আসিত, রমেশ জানিতে পারিত । এতাবৎ কাল পয্যন্ত গদাধর ও রমেশ সমান ভাগ করিয়া টাকাগুলি লইয়াছেন । কিন্ত শেষ চিঠিতে বিধভষেণ সত্বরে বাটী আসিবেন লিখিয়া দিয়াছেন । চিঠিখানি সকাল বেলা পাইয়া পড়িবার সময় গদাধরের মুখ রক্তহীন হইয়া গেল, এবং হাত কপিতে লাগিল । তদশ"নে হরকরা মনে করিল, কোন বিপদের সম্ববাদ আসিয়া থাকিবেক । এই ভাবিয়া সে জিজ্ঞাসা করিল, "গোপাল বাব, এ কার চিঠি ?” হরকরা গদাধরকে গোপাল বাব বলিয়াই জানত। গদাধর অম্লান বদনে উত্তর করিলেন, “আমার দাদার ।" হরকরা কহিল, "খবর ত ভাল সব ?" গদাধর উত্তর করিলেন, “ভাল ।” সেই চিঠি অবিলবে গদাধর রমেশকে দেখান। রমেশ যখন-তখন বলিতেন, "আমরা পলিসের লোক ” বস্তুতঃই তিনি যথাৰ্থ পলিসের লোক । চিঠিখানি দেখিয়া তিনি গদাধরের ভয় আরও দশগণ বাড়াইয়া দিলেন । তখন বন্ধতা