পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৯২ ত্যাগ করিরা কহিলেন, “আমাকে দুই শত টাকা দাও, নচেৎ আমি সমুদায় প্রকাশ ক'রে দেবো ।” গদাধর কহিলেন, “টোমাকে ২০০ টাকা ডেবো কেন ? টমি কি এর মঢ্যে নও ? টোমারও যে বিপড, আমারও সেই বিপড় ।” রমেশ কহিল, “আমি কি টাকা নিয়েছি যে আমার বিপদ " গদাধর আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিলেন, “সে কি রমেশ বাব ? টমি কেমন ক’রে বলে যে, টমি টাকা নেও নাই ?” রমেশ । আমি টাকা নিয়েছি, কে দেখেছে ? গদা । আমি ড়েকিছি । রমেশ । তুমি আসামী, তুমি ত সকলকে জড়াবেই । তোমার কথা কে বিশ্বাস করে ? গদাধর অতল জলে পড়িলেন । ঘোর বিপদ । এখন উপায় ? সর্বসমেত ছয় শত টাকা চরি করিয়াছেন । তার অধোঁক রমেশ বাব লইয়াছেন। বাকি অন্ধেকেরও দুই শত চান । বিস্তর অনুনয় বিনয় করিয়া রমেশ এক শত টাকায় নামিলেন । গদাধর এক শত টাকা দিতে রাজী হইয়া বাটী আসিয়াছিলেন। আসিবার সময় রমেশকে বলিয়া আসয়াছিলেন, “সন্ধ্যার পর একবার আমাডের বাড়ী অবশ্য ক’রে যেও ।" রমেশ গদাধরকে বাগে পাইয়া নিজে গম্ভীর হইল ; কহিল, “যদি অবকাশ পাই, তবে যাব । আমরা পলিসের লোক, আমাদের কি অলপ কাজ ?” গদাধর বাটী আসিয়া ঘণ্টায় ঘণ্টায় রমেশের নিকট লোক পঠাইয়াছিলেন । রমেশ আসি আসি বলিয়া সম্প্রধ্যার সময় আসিলেন। গদাধর রমেশকে তন্ট করিবার জন্য এক বোতল রম রামধন শ:"ড়ীর দোকান হইতে আনাইয়া রাখিয়াছেন । ব্রাড়ির কথা বলিয়াছিলেন, কিন্তু রামধনের পাড়াগোঁয়ে দোকান, সর্বদা ভাল বিলাতী জিনিস থাকে না, এ জন্য রমই পাঠাইয়া দিয়াছিল । গদাধর কহিলেন, "রমেশ বাব, বসো বোতলটা খালি করা চাই টো ?” রমেশ বসিলেন, কিন্তু কহিলেন, “আজ আমার শরীরে কিছু অসুখ হয়েছে, বিশেষ আজ বড় কাজ আছে, আর খেলে কাজ করতে পারবো না । এখন কাজের কথা বলো, তা না হ’লে ব্যথা বসে থাকা ।” গদাধর পৈতা দিয়া রমেশের দই হাত জড়াইয়া কাতর সবরে কহিলেন, “রমেশ বাব, এ বিপড় ঠেকে আমাকে উড্ডার করো। টোমায় এক-শ টাকা ডিটে হ’লে আর বাঁচি নে ! যাড আমার হাটে টাকা ঠাকুটো, টা হ’লে টমি যা চাইটে, আমি টাই ডিটাম, কিন্ট আমার হাটে একটি পয়সাও নেই ।” এই পয্যন্ত বলিয়া গদাধরচন্দ্র চক্ৰবত্তী মহাশয় রমেশের হাত ছাড়িয়া দিয়া তাঁহার পা ধরিলেন এবং শ্রাবণের ধারার ন্যায় নেত্রাসার বৃষণ করিতে লাগিলেন । গদাধরের রোদনে রমেশের হৃদয় কিছু মাত্র আদ্র হইল না। কহিল, “ছি