পাতা:স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে - ভগিনী নিবেদিতা (১৯৫১).pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাণ্ড্রেন্থানের মন্দির

 কিন্তু আমাদের হাজি অর্থাৎ মাঝিগণ একজন স্থানীয় লোককে লইয়া আসিল, সে আমাদিগকে একখানি নৌকা সংগ্রহ করিয়া দিবার ভার লইল। তখন আমাদের বিষাদ আনন্দে পরিণত হইল। লোকটী ফেনার নীচ হইতে একখানা নৌকা টানিয়া উঠাইল এবং উহাতে একটী শিকল বাঁধিয়া নিজে প্রায় এক কোমর জল ভাঙ্গিয়া আমাদিগকে এক এক করিয়া পুকুরটার চারিধারে ঘুরাইয়া লইয়া আসিতে লাগিল। এইরূপে আমরা অভিলাষানুযায়ী ভিতরে প্রবেশ করিতে সমর্থ হইলাম।

 স্বামিজী ব্যতীত আমাদের সকলেরই পক্ষে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্বে এই সবে হাতেখড়ি। সুতরাং তাঁহার দেখা শেষ হইবার পর তিনি আমাদিগকে কিরূপে ভিতরটা দেখিতে হইবে, তাহা শিখাইয়া দিলেন।

 ছাদের ভিতর পিঠের মধ্যস্থলে একটী খোদিত বৃহৎ সূর্য্যমূর্ত্তি-বিশিষ্ট চক্র এক সমচতুষ্কোণের মধ্যে বসান আছে; তাহার চারিটী কোণ পূর্ব্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে। ইহাতে ছাদটীর চারি কোণে চারিটী সমান ত্রিভুজ রহিয়া গিয়াছে, সে গুলি সুচারুরূপে সম্পাদিত সর্প-বেষ্টনাবদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীমূর্ত্তিসকলের অল্প পল্ তোলা খোদাইয়ের কাজে ভরিয়া দেওয়া হইয়াছে। দেওয়ালগুলিতে খালি জায়গা পড়িয়া রহিয়াছে, সেস্থানে এক সারি স্তূপ অঙ্কিত ছিল বলিয়া মনে হয়।

 বাহিরেও খোদাইএর কাজ ঠিক এই রকম করিয়া স্থানে স্থানে বিন্যস্ত হইয়াছে। ত্রিপত্র খিলানগুলির একটীতে—সম্ভবতঃ পূর্ব্ব দরজার উপরে যে খিলানটী তাহাতেই—বুদ্ধ দাঁড়াইয়া উপদেশ

৯১