এক হইয়া যায় এবং তাহারই দৃষ্টিতে তখন সমস্ত জগৎকে দেখে, যেন তাহাতে কোনরূপ প্রতিবাদ করিবার কিছুই নাই।
বিরাট প্রতিভার বিশাল খেয়ালে আমরা কৌতুক করিয়াছি, বীরত্বের উচ্ছ্বাসে উত্তেজিত হইয়া উঠিয়াছি—এ সমস্ত দিব্য লীলায় মনে হয় যেন বালরূপী ভগবান তাঁহার শিশুশয্যা হইতে জাগিতেছেন, আর আমরা দাঁড়াইয়া সাক্ষিস্বরূপ নিরীক্ষণ করিয়াছি!
কিন্তু ইহাতে কোনরূপ মানসিক উগ্রতা বা কঠোর গাম্ভীর্ঘ্যের ভাব ছিল না। দুঃখ আমাদের সকলেরই কাছ ঘেঁসিয়া গিয়াছে। অতীতের কত শোকস্মৃতি আসিয়া চলিয়া গিয়াছে। কিন্তু সে দুঃখও ঊর্দ্ধশিখ হইয়া হেম-জ্যোতিতে উদ্ভাসিত হইত, দীপ্তিতে মণ্ডিত হইত, তাহাতে কোনরূপ দাহ থাকিত না।
যদি সে ক্ষমতা আমার থাকিত, মহা উল্লাসে আমি সে ভ্রমণ-কাহিনী বর্ণন করিতাম। তবু আজ সে কথা লিখিতে লিখিতে যেন দেখিতেছি বারামুল্লায় সেই প্রস্ফুটিত প্রফুল্ল আইরিস কুসুম-সকল; দেখিতেছি ইস্লামাবাদে সফেদ্ (poplar)-তরুতলে তরুণ চারা ধানগাছগুলি; দেখিতেছি নক্ষত্রালোকিত হিমাচল-অরণ্যানীর দৃশ্যাবলী; আর দেখিতেছি দিল্লী এবং তাজের রাজভোগ্য সৌন্দর্য্যরাশি। স্মৃতির এই সকল নিদর্শন বর্ণনা করিতে কাহার না আগ্রহ হয়! কিন্তু বর্ণনায় উহা বিবর্ণ হইয়া উঠিবে—কেন না সে যে অসম্ভব! তাই স্মৃতির আলেখ্যে নয়, স্মৃতির আলোকেই তাহাদের অক্ষয় পুণ্যপ্রতিষ্ঠা। আর সেই প্রতিষ্ঠায় চিরসংযুক্ত হইয়া বিদ্যমান থাকিবে তথাকার কোমল হৃদয় শান্তপ্রকৃতি অধিবাসিবৃন্দ, যাহাদের আনন্দ, মনে হয়, আমাদের আগমনে