১০ই আগষ্ট। সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছে। আমরা সকলে একজনের সহিত দেখা করিবার জন্য বাহির হইলাম। ফিরিবার সময় তিনি তাঁহার নিবেদিতা নামক শিষ্যাকে তাঁহার সহিত ক্ষেতগুলির উপর দিয়া বেড়াইয়া আসিবার জন্য ডাকিলেন। তাঁহার কথাবার্ত্তা সমস্তই স্ত্রীশিক্ষা-কার্য্য ও এতসম্বন্ধে তাঁহার অভিপ্রায় কি, এই বিষয়ক ছিল। স্বদেশ এবং উহার ধর্মসমূহ সম্বন্ধে তাঁহার ধারণা যে সমন্বয়মূলক, তাঁহার নিজের বিশেষত্ব যে শুধু এইটুকু যে তিনি চাহেন, হিন্দুধর্ম্ম নিষ্ক্রিয় না থাকিয়া সক্রিয় হউক এবং উহার পরের উপর প্রভাব বিস্তার করিয়া তাহাদিগকে স্বমতে আনিয়ন করিবার সামর্থ্য থাকুক, আর কেবলমাত্র ছুৎমার্গকেই যে তিনি উঠাইয়া দিতে চান, এই সব সম্বন্ধে তিনি বলিতে লাগিলেন। তৎপরে তিনি গভীর ভাবের সহিত, যাঁহারা খুব প্রাচীনপন্থী (orthodox) তাহাদের অনেকের অসাধারণ ধর্মভাব সম্বন্ধে বলিলেন। তিনি বলিলেন, “ভারতের অভাব কার্য্যকুশলতা (practicality)। কিন্তু সে তজ্জন্য যেন কদাপি পুরাতন চিন্তাশীল জীবনের উপর তাহার অধিকার ছাড়িয়া না দেয়।
“শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ বলিয়াছেন, ‘সমুদ্রের নায় গভীর এবং আকাশের ন্যায় উদার হওয়াই আদর্শ।’ কিন্তু প্রাচীনপন্থিত্বের আবরণে রক্ষিত হৃদয়ে এই যে গভীর অন্তর্জীবনের বিকাশ ইহা কোনও মুখ্য সম্পর্কের ফল নহে, গৌণ সম্পর্কের ফল মাত্র। আর যদি আমরা নিজে নিজেকে ঠিক করি, তাহা হইলে জগৎও ঠিক হইয়া যাইবে, কারণ আমরা সকলেই এক নহি কি?” শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস তাঁহার ভিতরের অন্তস্তম তত্ত্বগুলির পর্য্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ
১২৫