তাঁহার অনুর্বাদের প্রথম কথাগুলি এই, “ভাই লাগিয়া থাক, লাগিয়া থাক, লাগিয়া থাক!” এবং তাহার শেষ এই ছিল– “সেই অঙ্কা বঙ্কা নামক দস্যু ভ্রাতৃদ্বয়, সেই নিষ্ঠুর কসাই সুজন এবং যে খেলার ছলে তাহার টিয়াপাখীকে কৃষ্ণনাম জপ করিতে শিখাইয়াছিল সেই গণিকা, ইহারা যদি উদ্ধার পাইয়া থাকে, তবে সকলেরই আশা আছে।[১] আবার, আমি তাঁহাকে মীরাবাই-এর সেই অদ্ভুত গল্পটি বলিতে শুনিয়াছি। মীরাবাই বৃন্দাবনে পৌঁছিয়া জনৈক বিখ্যাত সাধুকে[২] নিমন্ত্রণ করেন। বৃন্দাবনে পুরুষের সহিত স্ত্রীগণের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ, এই বলিয়া সাধু যাইতে অস্বীকার করেন। যখন তিনবার এইরূপ ঘটিল, তখন মীরাবাই, “বৃন্দাবনে কেহ পুরুষ আছে তাহা আমি জানিতাম না। আমার ধারণা ছিল যে, শ্রীকৃষ্ণই একমাত্র পুরুষরূপে বিরাজ করিতেছেন!” এই বলিয়া স্বয়ং তাঁহার নিকট গমন করিলেন এবং যখন বিস্মিত সাধুর সহিত তাঁহার সাক্ষাৎ হইল, তিনি ‘‘নির্ব্বোধ, তুমি নাকি নিজেকে
- ↑ সমগ্র মূল গীতটী এই—
হরিসে লাগি রহোরে ভাই।
তেরা বনত বনত বনি যাই॥
অঙ্কা তারে বঙ্কা তারে তারে সুজন কসাই।
সুগা পড়ায়কে গণিকা তারে তারে মীরাবাই॥
দৌলত দুনিয়া মাল খাজনা বলিয়া বৈল চরাই।
এক বাতকা টাণ্টা পড়ে তো খোঁজ খবর ন পাই॥
ঐসী ভক্তি কর ঘট ভিতর ছোড় কপট চতুরাঈ।
সেবা বন্দি ঔর অধীনতা সহজে মিলি রঘুরাই॥ - ↑ শ্রীচৈতন্যের প্রসিদ্ধ সন্ন্যাসী শিষ্য সনাতন। তিনি বাঙ্গালার নবাবের উজীরি-পদ পরিত্যাগ করিয়া সাধু হইয়াছিলেন।
১৩১