পুরুষ বলিয়া অভিহিত কর?” এই বলিয়া স্বীয় অবগুণ্ঠন সম্পূর্ণরূপে উন্মোচন করিয়া ফেলিলেন। আর যেমন সাধু সভয়ে চীৎকার করিয়া তাঁহার সম্মুখে সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত করিলেন, অমনি তিনিও তাঁহাকে মাতা যেরূপে সন্তানকে আশীর্ব্বাদ করেন, সেইরূপে আশীর্ব্বাদ করিলেন।
অদ্য স্বামিজী আকবরের প্রসঙ্গ উত্থাপন করিলেন এবং উক্ত বাদসাহের সভাকবি তানসেনের রচিত তাঁহার সিংহাসনাধিরোহণ-বিষয়ক একটা গীত আমাদের নিকট গাহিলেন।
তৎপরে স্বামিজী নানা কথা কহিতে কহিতে ‘আমাদের জাতীয়-বীর’ প্রতাপসিংহের সম্বন্ধে বলিতে লাগিলেন। কেহ তাঁহাকে কখনও বশ্যতাস্বীকার করাইতে পারে নাই। হাঁ, একবার মুহূর্ত্তের জন্য তিনি পরাভবস্বীকার করিতে প্রলুব্ধ হইয়াছিলেন বটে। একদিন চিতোর হইতে পলায়নের পর মহারাণী স্বয়ং রাত্রের সামান্য খাবার প্রস্তুত করিয়াছেন, এমন সময়ে এক ক্ষুধিত মার্জ্জার ছেলেদের জন্য যে রুটীখানি নির্দিষ্ট ছিল তাহারই উপর ঝাপট মারিয়া সেখানি লইয়া গেল। মিবাররাজ স্বীয় শিশুসন্তানগুলিকে খাদ্যের জন্য কাঁদিতে দেখিলেন। তখন বাস্তবিকই তাঁহার বীর হৃদয় অবসন্ন হইয়া পড়িল। অদুরে স্বাচ্ছন্দ্য এবং শান্তির চিত্র দেখিয়া তিনি প্রলুব্ধ হইলেন এবং মুহূর্তের জন্য তিনি এই অসমান যুদ্ধ হইতে বিরত হইয়া আকবরের সহিত কুটুম্বিতা-স্থাপনের সঙ্কল্প করিয়াছিলেন; কিন্তু তাহা কেবল এক মুহূর্তেরই জন্য। সনাতন-বিশ্বনিয়ন্তা পরমেশ্বর তাঁহার নিজ জনকে রক্ষা করিয়া থাকেন। উক্ত চিত্র প্রতাপের মানসপট হইতে অন্তর্হিত হইতে না হইতেই
১৩২