পাতা:স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে - ভগিনী নিবেদিতা (১৯৫১).pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে

তাঁহার জ্বলন্ত উৎসাহে অনুপ্রাণিত হওয়ায় আমরা এই সকলের মর্ম্মে প্রবেশ করিতে, এমন কি সেই প্রথমাবস্থাতেও অল্পস্বল্প অর্থবোধ করিতে সমর্থ হইতাম।

 আলোচনার বিষন্ন যাহাই হউক না কেন, উহা সর্ব্বদাই পরিণামে অদ্বর অনন্তের কথায় পর্য়্য‍বসিত হইত। বাস্তবিক জগৎকে এইরূপে ব্যাখ্যা করা আচার্য্যদেবের অদ্বৈত্যবাদে সম্যক্ ব্যুৎপত্তির শ্রেষ্ঠ নিদর্শন বলিয়া আমার মনে হয়। সাহিত্য, প্রত্নতত্ত্ব অথবা বিজ্ঞান—যে কোন তত্ত্বের বিচারেই তিনি প্রবৃত্ত হউন না কেন, সেটী যে সেই চরম অনুভূতিরই একটী দৃষ্টান্তমাত্র, তাহা তিনি সদাই আমাদের মনে বদ্ধমূল করিয়া দিতেন। তাঁহার চক্ষে কোন জিনিসই ধর্ম্মের এলাকার বহির্ভূত ছিল না। বন্ধন-মাত্রকেই তিনি অত্যন্ত ঘৃণার চক্ষে দেখিতেন এবং যাহারা ‘শৃঙ্খলকে পুণ্যের আবরণে ঢাকিতে চাহে তাহাদিগকে তিনি ভয়ানক লোক বলিয়া গণ্য করিতেন; কিন্তু তাই বলিয়া উচ্চদরের রসশিল্পের এবং এই বিষয়ের মধ্যে প্রকৃত সমালোচক যে ব্যবধান দেখিতে পান, তাহা কখনও তাঁহার দৃষ্টি এড়াইত না। একদিন আমরা কয়েক জন ইউরোপীয় ভদ্রলোককে নিমন্ত্রণ করিয়াছিলাম। স্বামিজী সেদিন পারসিক কবিতার বিস্তৃতভাবে আলোচনা করিয়াছিলেন:

 “প্রিয়তমের মুখের একটা তিলের বদলে আমি সমরকন্দের সমস্ত ঐশ্বর্য্য বিলাইয়া দিতে প্রস্তুত!”—এই পদটী আবৃত্তি করিতে করিতে তিনি সহসা সোৎসাহে বলিয়া উঠিলেন, “দেখ, যে লোক একটা প্রেমসঙ্গীতের মাধুর্য্য বুঝিতে পারে নাই তাহার জন্য