আমি এক কাণাকড়িও দিতাম না।” তাঁহার কথাবার্ত্তা সরদ উক্তিসমূহে পূর্ণ থাকিত। সেই দিনই অপরাহ্নে কোন রাজনৈতিক বিষয়ের বিচার করিতে করিতে তিনি বলিলেন, “দেখা যাইতেছে যে, একটা জাতিগঠনের পক্ষে সাধারণ প্রীতির ন্যয় একটা সাধারণ বিরাগেরও আবশ্যকতা আছে।”
কয়েক মাস পরে তিনি বলিয়াছিলেন, “যাঁহার জগতে কোন বিশেষ কার্য্য করিবার আছে, তাঁহার কাছে আমি কখনও উমা এবং মহেশ্বর ভিন্ন অন্য দেবদেবীর কথা কহি না। কারণ মহেশ্বর এবং জগন্মাতা হইতেই কর্ম্মবীরগণের উদ্ভব।” তথাপি ভক্তিই যে এই সময়ের প্রত্যেক আলোচনার লক্ষীভূত ছিল, তাহা তিনি তখন জানিতে পারিতেন কি না, এ কৌতূহল কখনও কখনও আমার মনে উদিত হইয়াছে। ভাবের উচ্ছ্বাসে বাঁহাদের মানসিক শক্তিহ্রাসের সম্ভাবনা আছে তাঁহাদের জন্য এ সম্বন্ধে তাঁহার আশঙ্কা থাকিলেও, ভগবানের প্রতি উদ্দাম প্রেমে আত্মহারা হওয়া যে কি জিনিস, তিনি তাহার আভাস না দিয়া থাকিতে পারিতেন না। তাই তিনি আমাদের কাছে—
“প্রেমের রাজা কুঞ্জবনে কিশোরী,
প্রেমের দ্বারে আছে দ্বারী, করে মোহন বাঁশরী,
বাঁশী বল্চে রে সদাই, প্রেম বিলাবে কল্পতরু রাই,
কারু যেতে মানা নাই!
ডাক্চে বাঁশী—আয় পিপাসী জয় রাধে নাম গান ক’রে।”[১]
এই সব গান সুর-সংযোগে গাহিতেন।
- ↑ কবি গিরিশচন্দ্র ঘোষ-প্রণীত ‘নিমাই সন্ন্যাস’।
৯