সহিত তাঁহার এক প্রস্থ ভ্রমণ শেষ করিয়া ফিরিবার মুখে। কখনও কখনও, কিন্তু কালেভদ্রে আমরা বৈকালেও তাঁহার দেখা পাইতাম, হয় তিনিই বেড়াইতে বাহির হইতেন, নয় ত আমরা নিজেরাই তিনি যেখানে দলবলসহ অবস্থান করিতেছিলেন সেই কাপ্তেন সেভিয়ারের গৃহে যাইয়া তাঁহার সহিত দেখা করিতাম। একদিন মাত্র অপরাহ্ণে তিনি আমাদের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছিলেন।
আলমোড়ার এই প্রাতঃকালীন কথোপকথনগুলিতে একটী নূতন এবং অননুভূতপূর্ব্ব ব্যাপার আসিয়া জুটিয়াছিল। উহার স্মৃতি কষ্টকর হুইলেও শিক্ষাপ্রদ। একপক্ষে যেমন এক নূতনতর রকমের আশাভঙ্গ ও অবিশ্বাসের ভাব, অপরপক্ষেও তেমনি বিরক্তি ও বলপরীক্ষার ভাব যেন দেখা দিয়াছিল। পাঠকের স্মরণ রাখা উচিত যে, স্বামিজীর তদানীন্তন শিষ্যগণের মধ্যে কনিষ্ঠ ছিলেন একজন ইংরেজ রমণী এবং চিন্তাপ্রণালী হিসাবে এই ব্যাপারের গুরুত্ব কতদূর, কত প্রবল পক্ষপাতিত্ব লইয় ইংরেজগণ ভারতকে বুঝিতে চাহেন ও তাঁহারা নিজ জাতি, নিজেদের কৃর্ত্তি-কলাপ এবং ইতিহাসকে কিরূপ অন্ধ গৌরবের চক্ষে দেখেন—এ বিষয়ে উক্ত শিষ্যাকে মঠে দীক্ষিত করিবার পরদিবস পর্য্যন্ত স্বামিজীর কোনই স্পষ্ট ধারণা ছিল না। সেই দিন স্বামিজী উল্লাসের সহিত তাঁহাকে প্রশ্ন করিয়াছিলেন, “তুমি এখন কোন্ জাতিভুক্তা?” উত্তর শুনিয়া স্বামিজী বিস্মিত হইলেন, দেখিলেন তিনি ইংরেজের জাতীয় পতাকাকে কি প্রগাঢ় ভক্তি ও পূজার চক্ষে দেখেন; দেখিলেন যে একজন ভারতীয় রমণীর তাঁহার ইষ্টদেবতার প্রতি যে ভাব, ইহারও
১৮