পাতা:স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে - ভগিনী নিবেদিতা (১৯৫১).pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নৈনীতাল ও আলমোড়ায়

এই পতাকার প্রতি অনেকটা সেই ভাব। স্বামিজীর তাৎকালিক বিস্ময় এবং আশাভঙ্গ বাহিরে প্রকাশ পাইল না বলিলেও হয়। একটা বিস্ময়ের চাহনি মাত্র, আর কিছুই নহে এবং উক্ত শিষ্যা কিরূপ ভাসা ভাসা ভাবে তাঁহার দলভুক্ত হইয়াছেন ইহা জানিতে পারিলেও বঙ্গভূমে অবস্থানের বাকী কয় সপ্তাহে তাঁহার আস্থা ও সৌজন্যের কিছুমাত্র হ্রাস হয় নাই। কিন্তু আলমোড়ায় আসিয়া যেন এক নূতন পাঠ লওয়া সুরু হইয়াছে বলিয়া বোধ হইতে লাগিল এবং পাঠশালার শিক্ষা ও শাসন যেমন শিক্ষার্থীর প্রায়ই অপ্রীতিকর হয়, তেমনি এখানেও উহা বৎপরোনাস্তি কষ্টসাধ্য হইলেও, কোনও আদর্শকে অসম্পূর্ণভাবে আয়ত্ত করা যে সর্ব্বথা পরিহার্য্য তাহা হৃদয়ঙ্গম হইল। একটী মনকে তাহার স্বাভাবিক ভারকেন্দ্র ত্যাগ করাইতে হইবে। এর চেয়ে আর বেশী কিছুই করা হয় নাই, কখনও কোন ধারণা বা মত জোর করিয়া চাপান হয় নাই, শুধু একদেশিতা হইতে দূরে রাখিবার চেষ্টা হইয়াছিল মাত্র। এই ভীষণ পরীক্ষার অন্তেও স্বামিজী শিষ্যার নূতন বিশ্বাস এবং মত কিরূপ দাঁড়াইল এ বিষয়ে জানিতেও চাহেন নাই এবং যেখানে জাতি ও দেশ সংশ্লিষ্ট, সে সকল ক্ষেত্রে শিক্ষার কোনরূপ জবরদস্ত প্রণালী আর কখনও অবলম্বিত হয় নাই। স্বামিজী সমস্ত ব্যাপারটীর আর আদৌ উল্লেখ করেন নাই। তাঁহার শ্রোত্রীও অতঃপর নিষ্কৃতি পাইলেন। কিন্তু তাঁহার চিন্তাপ্রণালী ও অনুভূতিগত পার্থক্য এরূপ পূর্ণ ও প্রবলভাবে প্রকাশ পাইয়াছিল যে, শিষ্যার পক্ষে মানসিক রাজ্যে নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকা অসম্ভব হইয়াছিল এবং অবশেষে

১৯