দেবের সমসাময়িক ভূম্যধিকারী ভক্তবীর রায় রামানন্দের মুখে এরূপ সুন্দরভাবে প্রকাশ পাইয়াছে—
“পহিললি রাগ নয়নভঙ্গ ভেল;
অনুদিন বাঢ়ল অবধি না গেল।
না সো রমণ না হাম্ রমণী;
দুঁহ মন মনোভাব পেশল জানি।” ইত্যাদি
—শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, মধ্যলীলা, ৮ম পরিচ্ছেদ
সেই দিন প্রাতঃকালেই তিনি পারস্যের বাব নামক দেবতার পূজকগণের কথা বলিয়াছিলেন—সেই পরার্থে আত্মবলিদানের যুগের কথা, যখন স্ত্রীজাতিকর্ত্তৃক অনুপ্রাণিত হইয়া পুরুষগণ কার্য্য করিত এবং তাহাদিগকে ভক্তির চক্ষে দেখিত। এবং নিশ্চিত সেই সময়েই তিনি বলিয়াছিলেন যে প্রতিদানের আকাঙ্ক্ষা না রাখিয়া ভালবাসিতে পারে বলিয়াই তরুণবয়স্থগণের মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠতা এবং তাহাদের মধ্যে ভারী মহৎকার্য্যের বীজ সূক্ষ্মভাবে নিহিত থাকে—ইহাই তাঁহার ধারণা।
আর একদিন অরুণোদয়কালে যখন ঊষার আলোকরঞ্জিত চিরতুষাররাশি উদ্যান হইতে দৃষ্টিগোচর হইতেছিল, সেই সময় স্বামিজী আসিয়া শিব ও উমা সম্বন্ধে দীর্ঘ বার্তালাপ করিতে করিতে অঙ্গুলিনির্দেশ করিয়া বলিলেন, “ঐ যে ঊর্দ্ধে শ্বেতকায় তুষারমণ্ডিত শৃঙ্গরাজি উহাই শিব, আর তাঁহার উপর যে আলোকসম্পাত হইয়াছে তাহাই জগজ্জননী!” কারণ এই সময়ে এই চিন্তাই তাঁহার মনকে বিশেষভাবে অধিকার করিয়াছিল যে, ঈশ্বরই জগৎ—তিনি জগতের ভিতর বা বাহিরে নহেন, আর জগৎও ঈশ্বর
২৯