দিয়া ‘ছবি প্রস্তুত’ বলিয়া সংবাদ দিলেন এবং কৃষকপুত্রকে আসিয়া উহা দেখিয়া যাইবার জন্য অনুরোধ করিলেন। সে আসিয়া ক্ষণেক চিত্রের সম্মুখে দাড়াইয়া রহিল, পরে শোকবিহ্বলচিত্তে বলিয়া উঠিল, “বাবা! বাবা! তোমার সঙ্গে শেষ দেখা হবার পর তুমি কত বদলে গেছ!” এই ঘটনার পরে ইঞ্জিনিয়ার যুবক আর স্বামিজীর সহিত বাক্যালাপ করিত না। ইহাতে অন্ততঃ এইটুকু বোঝা গিয়াছিল যে, সে একটা গল্পের মর্ম্ম গ্রহণ করিতে পারিত। কিন্তু হিন্দু সন্ন্যাসী তাহাকে রাগিয়া যাইতে দেখিয়া প্রকৃতই বিস্মিত হইয়াছিলেন।
যাহা হউক, এবম্প্রকার সাধারণভাবে মনোরঞ্জন করিবার নানা বিষয় সত্ত্বেও স্বামিজীর মনের ভিতর এই সময় একটা বিরক্তি প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল এবং আমাদের দলের মধ্যে যাঁহারা পুরাণ ছিলেন, তাঁহাদের একজনের মনে এইরূপ দৃঢ় ধারণা হইল যে, আচার্য্যদেবের বিশ্রাম এবং শান্তির প্রয়োজন। অনেকবার মানবজীবনের অশান্তি-নির্যাতনের কথা তিনি বিস্ময় প্রকাশপূর্ব্বক বলিয়াছিলেন এবং তাঁহার বিশ্রাম ও শান্তির যে একাস্ত প্রয়োজন হইয়া উঠিয়াছিল তাহার যে আরও কত নিদর্শন ছিল, তাহা কে বলিবে? এ বিষয়ে তিনি দুই-একটা কথা বলিয়াছিলেন বটে, অতি অল্প হইলেও তাহাই যথেষ্ট। তিনি কয়েক ঘণ্টা পরে ফিরিয়া আসিয়া বলিলেন, “আমার নির্জ্জন বাসের নিমিত্ত বড়ই আকাঙ্ক্ষা হইয়াছে, আমি একাকী বনপ্রদেশে গমন করিয়া শান্তিলাভ করিব।”
তারপর ঊর্দ্ধে দৃষ্টিপাত করিয়া তিনি মাথার উপর বালশশী দীপ্তি পাইতেছে দেখিলেন এবং বলিলেন, “মুসলমানগণ শুক্লপক্ষীর
৩৮