শশিকলাকে যথেষ্ট আদরের চক্ষে দেখিয়া থাকেন। আইস, আমরাও নবীন শশিকলার সহিত নবজীবন আরম্ভ করি।” এই বলিয়া তিনি তাঁহার মানস কন্যাকে প্রাণ খুলিয়া আশীর্ব্বাদ করিলেন এবং কন্যাও বুঝিলেন যে, স্বামিজীর সহিত তাঁহার দ্বন্দ্বভাবরূপ পুরাতন সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হইল। এক নূতন এবং গভীরতম সম্বন্ধ যে উহার স্থান অধিকার করিতেছিল তাহা তিনি ঘুণাক্ষরেও জানিতে পারিলেন না; কেবল এইমাত্র জানিলেন যে, সেই মুহূর্ত্তটি সম্পূর্ণ অভিনব এবং অপরূপ মাধুর্য্যময়।
এইরূপে সেই সংঘর্ষের অবসান হইল এবং উক্ত শিষ্যা এখন হইতে বরাবর স্বামিজীর সর্ব্ববিধ মতামত আপাতদৃষ্টিতে হাজার অসম্ভব বা অপ্রিয় বোধ হইলেও, পরীক্ষার্থ অবাধে গ্রহণ করিতে প্রস্তুত হইলেন। তৎসম্বন্ধে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া—সে অবসরমত হইবে।
২৫শে মে। তিনি যেদিন যাত্রা করিলেন সেদিন বুধবার। শনিবারে তিনি ফিরিয়া আসিলেন। পূর্ব্বেও তিনি প্রতিদিন দশঘণ্টা করিয়া অরণ্যানীর নির্জ্জনতার মধ্যে বাস করিতেন বটে, কিন্তু রাত্রিকালে নিজ তাঁবুতে ফিরিয়া আসিলে চারিদিক হইতে এত লোক সঙ্গলাভের জন্য সাগ্রহে তাঁহাকে ঘিরিয়া ধরিত যে, তাঁহার ভাবভঙ্গ হইয়া যাইত এবং সেই জন্যই তিনি এইরূপে পলায়ন করিয়াছিলেন। এখন তাঁহার মুখমণ্ডলে জ্যোতিঃ ফুটিয়া উঠিয়াছে। তিনি দেখিয়াছেন যে, তিনি এখনও সেই পুরাতন, নগ্নপদে ভ্রমণক্ষম এবং শীতাতপ ও অন্নাহার-সহিষ্ণু সন্ন্যাসীই আছেন। প্রতীচ্যবাস তাঁহাকে বিকৃত করিতে পারে নাই। এই
৩৯