পরে তিনি যে স্থানে ইহা প্রথম পাইয়াছিলেন, সে স্থানেই আর থাকিতে চাহিলেন না; বলিলেন, তাঁহার সর্ব্বাপেক্ষা বিশ্বস্ত শিষ্যের আকৃতি রাতদিন তাঁহার মনে পড়িতেছে এবং ইহা যে দুর্ব্বলতা, একথাও জ্ঞাপন করিলেন। ইহা যে দোষাবহ, তাহা দেখাইবার জন্য তিনি বলিলেন যে, কাহারও স্মৃতি দ্বারা এইরূপে পীড়িত হওয়াও যা আর ক্রমবিকাশের উচ্চতর সোপানে মৎস্য কিংবা কুকুর-সুলভ লক্ষণগুলি অবিকল বজায় রাখাও তাই, ইহাতে মনুষ্যত্বের লেশমাত্র নাই। মানুষকে এই ভ্রম জয় করিতে হইবে এবং জানিতে হইবে যে, মৃতব্যক্তিগণ যেমন আগে ছিলেন, এখনও ঠিক তেমনি এইখানে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছেন। তাঁহাদের অনুপস্থিতি এবং বিচ্ছেদটাই শুধু কাল্পনিক। আবার পরক্ষণেই কোন ব্যক্তিবিশেষের (সগুণ ঈশ্বরের) ইচ্ছানুসারে এই জগৎ পরিচালিত হইতেছে, এইরূপ নির্ব্বুদ্ধিতামূলক কল্পনার বিরূদ্ধে তিনি তীব্রভাবে প্রতিবাদ করিয়া বলিলেন, “গুড্উইনকে মারিয়া ফেলার জন্য মনে কর কি এরূপ এক ঈশ্বরকে যুদ্ধে নিপাত করাটা যেন মানুষের অধিকার এবং কর্ত্তব্যের মধ্যে নহে!–গুড্উইন্ বাঁচিয়া থাকিলে কত বড় বড় কাজ করিতে পারিত!” অন্ততঃ ভারতবর্ষে মনের এইরূপ ভাবকে ধর্ম্মের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ ভাব বলিয়া মানিয়া লইতে কাহারও কোন বাধা নাই, কারণ এই অবিচলিত ভাবই সর্ব্বোচ্চ সত্যের সর্ব্বাপেক্ষা অধিক অনুগামী।
স্বামিজীর এই উক্তিটির সহিত এক বৎসর পরে যে আর একটি উক্তি শুনিয়াছিলাম তাহার উল্লেখ বোধ হয় অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। আমরা যে সকল অলীক কল্পনাসহায়ে সান্ত্বনালাভের চেষ্টা করি,
৪৩