পূজা করি না, সুখেরও পূজা করি না। এই উভয়ের মধ্য দিয়া যাহা সুখ-দুঃখের অতীত, তাহাই লাভ করা আমাদের উদ্দেশ্য।”
৯ই জুন। এই বৃহস্পতিবার প্রভাতে শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে কথাবার্তা হইল। স্বামিজীর মনের তাঁহার জন্মগত হিন্দুশিক্ষাদীক্ষাসুলভ এক বিশেষত্ব এই ছিল যে, তিনি হয়ত একদিন কোন একটী ভাবে ভাবিত হইয়া সেই ভাবের গুণব্যাখ্যা করিলেন, আবার পর দিনই হয়ত তাহাকে কঠোরভাবে বিশ্লেষণ করিয়া একেবারে নির্জ্জীব করিয়া ছাড়িয়া দিতে পারিতেন। তিনি তাঁহার স্বজাতিসুলভ এই বিশ্বাসের এত পূর্ণমাত্রার অধিকারী ছিলেন যে, যদি কোন ভাব আধ্যাত্মিক দৃষ্টিতে সত্য এবং যুক্তিসহ হয়, তাহা হইলে উহার বাস্তব সত্তা থাকুক বা না থাকুক, তাহাতে কিছুই আসে যায় না। এইরূপ চিন্তা প্রণালীর প্রথম আভাস তিনি বাল্যকালে তাঁহার আচার্য্যদেবের নিকট প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। কোন এক ধর্ম্মেতিহাসে প্রামাণিকতা বিষয়ে সন্দিহান হওয়ায় শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁহাকে বলিয়াছিলেন, “কি! তাহা হইলে তুমি কি মনে কর না যে, যাহারা এরূপ সব ভাবের ধারণা করিতে পারিত, তাহারা নিশ্চিত সেই সব ভাবেরই যেন মূর্ত্তিমান্ বিগ্রহ ছিল?”
সুতরাং, যেমন খ্রীষ্টের অস্তিত্ব বিষয়ে তেমনই শ্রীকৃষ্ণের অস্তিত্ব সম্বন্ধেও তিনি কখনও কখনও তাঁহার স্বভাবসুলভ সাধারণ সন্দেহের ভাবেও কথাবার্ত্তা বলিতেন। “ধর্ম্মাচার্য্যগণের মধ্যে কেবল বুদ্ধ ও মহম্মদের ভাগ্যেই ‘শত্রু-মিত্র উভয়’-লাভই ঘটিয়াছিল, সুতরাং তাঁহাদের জীবনের ঐতিহাসিক অংশে সন্দেহের লেশমাত্র নাই। আর শ্রীকৃষ্ণ, তিনি ত সকলের চেয়ে বেশী
৪৬