পাতা:স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে - ভগিনী নিবেদিতা (১৯৫১).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে

সেইখানে স্বামিজী আমাদের জন্য রুদ্র-স্তুভিটীর অনুবাদ করিলেন। “অসতো মা সদ্গময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়, মৃত্যোর্মামৃতং গময়, আবিরাবির্ম এধি, রুদ্র যত্তে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যম্।”—অর্থাৎ আমাদিগকে অসৎ হইতে সতে লইয়া যাও, আমাদিগকে তমঃ হইতে জ্যোতিতে লইয়া যাও, আমাদিগকে মৃত্যু হইতে অমৃতে লইয়া যাও, আমাদিগের নিকট আবির্ভূত হও, আবির্ভূত হও, আমাদিগের নিকট আগমন কর। হে রুদ্র, তোমার যে দক্ষিণ মুখ, তদ্দ্বারা আমাদিগকে নিত্য রক্ষা কর।

 ‘আবিরাধির্ম এধি’—এই অংশের অনুবাদে তিনি অনেকক্ষণ ইতস্ততঃ করিলেন, ভাবিতে লাগিলেন ইহার অনুবাদ এইরূপ দিবেন কি না: “আমাদের অন্তগুলে আসিয়া আমাদের সহিত মিলিত হও।” কিন্তু অবশেষে তিনি আমাদের নিকট তাঁহার চিন্তার কারণ ব্যক্ত করিয়া সঙ্কোচের সহিত বলিলেন, “ইহার আসল মানে এই—আমাদেরই ভিতর দিয়া আমাদের নিকট আইস।” তিনি স্পষ্টই ভয় করিয়াছিলেন যে, এই স্বল্পাক্ষর বাক্যটি অপূর্ব্ব গম্ভীরার্থ বলিয়া ইংরেজীতে ইহার ঠিক ঠিক অর্থবোধ হইবে না। কিন্তু সেদিন বৈকালে আমরা যাহা নিঃসঙ্কোচে গ্রহণ করিয়াছিলাম, সেই অর্থটীই পরে আমার নিজের চক্ষে খুব প্রামাণিক বলিয়া বোধ হইয়াছে। কারণ আমি বুঝিয়াছি যে, ইহার আরও আক্ষরিক অনুবাদ এইরূপ হইবে: “হে রুদ্র, তুমি কেবল তোমার নিজের নিকটেই প্রকাশিত আছ, তুমি আমাদের নিকটেও আত্মপ্রকাশ কর।” এক্ষণে আমি তাঁহার অনুবাদটীকে সমাধিকালীন অনুভূতিরই এক ক্ষিপ্র ও সাক্ষাৎ

৫২