যাদুঘরে দেখিয়া থাকিবেন) এবং “কলাবিদ্যাসম্বন্ধে ভারতবর্ষ চিরকাল যবনগণের শিষ্যত্ব করিয়াছে”–ইউরোপীয়গণের এই অর্থহীন অন্যায় দাবী নিরাকরণ করিতে করিতে তিনি যারপরনাই উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন। তৎপরে কতিপয় চির-প্রত্যাশিত নগর—কোনও কোনও বিশ্বাসী ইংরেজ শিষ্যের শৈশবের বাসভূমি লুধিয়ানা, যেথায় স্বামিজীর ভারতীয় বক্তৃতার অবসান হইয়াছিল সেই লাহোর এবং অন্যান্য নগর—চকিতের ন্যায় দৃষ্টিপথে পতিত হইয়া আবার দৃষ্টির বহির্ভূত হইয়া গেল। আমরা অনেক শুষ্ক কঙ্করময় নদীগর্ভের উপর দিয়াও চলিতেছিলাম। শুনিলাম, দুইটী নদীর মধ্যবর্তী স্থানের নাম দো-আব এবং সমস্ত নদীগুলি যে ভূখণ্ডের অন্তর্গত তাহার নাম পঞ্জাব। গোধূলির আলোকে এই সকল পার্বত্য ভূখণ্ডের কোন একটী অতিক্রমকালে স্বামিজী আমাদিগকে তাঁহার সেই বহুদিন পূর্ব্বের অপূর্ব্ব দর্শনের কথা বলিলেন। তিনি তখন সবেমাত্র সন্ন্যাসজীবনে পদার্পণ করিয়াছেন এবং পরে তাঁহার বরাবর এই বিশ্বাস ছিল যে, সংস্কৃতে মন্ত্র-আবৃত্তি করিবার প্রাচীন রীতি তিনি এই ঘটনা হইতেই পুনঃপ্রাপ্ত হইয়াছিলেন।
তিনি বলিলেন, “সন্ধ্যা হইয়াছে; আর্য্যগণ সবেমাত্র সিন্ধুনদতীরে পদার্পণ করিয়াছেন, ইহা সেই যুগের সন্ধ্যা। দেখিলাম, বিশাল নদের তীরে বসিয়া এক বৃদ্ধ। অন্ধকার-তরঙ্গের পর অন্ধকার-তরঙ্গ আসিয়া তাঁহার উপর পড়িতেছে, আর তিনি ঋগ্বেদ হইতে আবৃত্তি করিতেছেন। তার পর আমি সহজ অবস্থা প্রাপ্ত হইলাম এবং আবৃত্তি করিয়া যাইতে লাগিলাম। বহু প্রাচীনকালে আমরা যে সুর ব্যবহার করিতাম, ইহা সেই সুর।”
৫৭