শ্রীরামকৃষ্ণ এই সকলকে কিরূপ দৃষ্টিতে দেখিতেন, ইহা জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলিলেন, “ঠাকুর বলিতেন—হাঁ, তা বটে, কিন্তু প্রত্যেক বাড়ীরই একটা পাইখানার দুয়ারও ত আছে!” এই বলিয়া স্বামিজী দেখাইয়া দিলেন যে, সকল দেশেই যেসকল সম্প্রদায়ে কদাচারের ভিতর দিয়া ধর্ম্মলাভের চেষ্টা করা হয়, তাহারা এই শ্রেণীভুক্ত। এই সত্যোদঘাটন ভীষণ হইলেও আমাদের পক্ষে অত্যাবশ্যক ছিল এবং ইহা যথাস্থানে এই উদ্দেশ্যে বর্ণিত হইল যেন কেহ একথা না বলিতে পারেন যে, স্বামিজী তাঁহার স্বদেশবাসিগণের শ্রেণীবিশেষের বা তাহাদের ধর্ম্মমতের বিরুদ্ধে যেসকল অতি অপ্রিয় কথা বলা যাইতে পারে, সেগুলিকে তাঁহার সরলবিশ্বাসী ভক্তগণের নিকট লুকাইয়া রাখিয়া তাহাদিগকে প্রতারণা করিয়াছিলেন।
আমরা স্বামিজীর সহিত পালা করিয়া টঙ্গায় যাইবার ব্যবস্থা করিলাম এবং এই পরবর্ত্তী দিনটী যেন অতীত স্মৃতির আলোচনাতেই পূর্ণ ছিল।
তিনি ব্রহ্মবিদ্যা সম্বন্ধে—একমেবাদ্বিতীয়ম্ সত্তার সাক্ষাৎকার সম্বন্ধে বলিতে লাগিলেন এবং প্রেমই যে পাপের একমাত্র ঔষধ তাহাও বলিলেন। তাঁহার একজন স্কুলের সহপাঠী ছিলেন। তিনি বড় হইয়া ধনশালী হইলেন কিন্তু তাঁহার স্বাস্থ্যভগ্ন হইল। রোগটীর ঠিক পরিচয় পাওয়া যাইতেছিল না; উহা দিন দিন তাঁহার সামর্থ্য ও জীবনীশক্তি ক্ষয় করিতেছিল এবং চিকিৎসকগণের নৈপুণ্য ইহার নিকট সম্পূর্ণরূপে পরাভূত হইয়াছিল। অবশেষে ‘স্বামিজী চিরকাল ধর্ম্মাভ্যাসী’ ইহা
৬১