হইল যেন কোন সাজার নিমিত্ত তিনি কিছুদিনের জন্য শিবলোক হইতে নির্ব্বাসিত হইয়াছেন, আর তাঁহার জীবনের একমাত্র চেষ্টা হইবে তথায় ফিরিয়া যাওয়া। তিনি একদিন বলিয়াছিলেন যে, তাঁহার প্রথম আচার-মর্য্যাদালঙ্ঘন পাঁচ বৎসর বয়সে হইয়াছিল। সেই সময় তিনি খাইতে খাইতে ডান হাত এঁটো-মাখা থাকিলে বাঁ হাতে জলের গেলাস তুলিয়া লওয়া কেন অধিক পরিচ্ছন্নতার কাজ হইবে না, এই মর্ম্মে তাঁহার মাতার সহিত এক তুমুল তর্কে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। এই দুষ্টামি অথবা এবংবিধ অপর সব দুষ্টামির জন্য জননীর অমোঘ ঔষধ ছিল—বালককে জলের কলের নীচে বসাইয়া দেওয়া এবং তাঁহার মস্তকে শীতল জলধারা পড়িতে থাকিলে ‘শিব! শিব!’ উচ্চারণ করা। স্বামিজী বলিলেন যে এই উপায়টী কখনও বিফল হইত না। মাতার জপ তাঁহাকে তাঁহার নির্ব্বাসনের কথা মনে পড়াইয়া দিত এবং তিনি মনে মনে “না, না, এবার আর নয়!” বলিয়া পুনর্ব্বার শান্ত এবং বাধ্য হইতেন।
মহাদেবের প্রতি তাঁহার যৎপরোনাস্তি ভালবাসা ছিল এবং একদা তিনি ভারতের ভাবী স্ত্রীজাতি-সম্বন্ধে বলিয়াছিলেন যে, যদি তাহারা তাহাদের নূতন নূতন কর্তব্যের মধ্যে শুধু মনে করিয়া মধ্যে মধ্যে ‘শিব! শিব!’ বলে, তাহা হইলেই তাহাদের পক্ষে যথেষ্ট পূজা করা হইবে। তাঁহার নিকট হিমালয়ের বাতাস পর্য্যন্ত সেই অনাদি অনন্ত ধ্যানের বিষণ্নীভূত মূর্ত্তি দ্বারা ওতপ্রোত, যে ধ্যান সুখচিন্তার দ্বারা ভগ্ন হইবার নহে এবং তিনি বলিলেন যে, এই গ্রীষ্ম ঋতুতেই তিনি প্রথম সেই প্রাকৃতিক কাহিনীর অর্থ বুঝিলেন, যাহাতে মহাদেবের মস্তকে এবং সমতল প্রদেশে
৬৩