পাতা:স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে - ভগিনী নিবেদিতা (১৯৫১).pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে

অবতরণের পূর্ব্বে শিবের জটার মধ্যে সুরধুনীর ইতস্ততঃ সঞ্চরণ কল্পিত হইয়াছে। তিনি বলিলেন যে, তিনি বহুদিন ধরিরা পর্ব্বতমধ্যবাহিনী নদী ও জলপ্রপাতসকল কি কথা বলে, ইহা জানিবার জন্য অনুসন্ধান করিয়াছিলেন এবং অবশেষে জানিয়াছিলেন যে, ইহা সেই অনাদি অনন্ত ‘হর হর বম্ বম্‌’ ধ্বনি! তিনি একদিন শিবের প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন, “হাঁ, তিনিই মহেশ্বর, শান্ত, সুন্দর এবং মৌন। আর আমি তাঁহার পূজক বলিয়া শ্লাঘ্য।”

 আর একবার তাঁহার বক্তব্য বিষয় ছিল―বিবাহ কিরূপে ঈশ্বরের সহিত জীবাত্মার সম্বন্ধেরই আদর্শস্বরূপ। তিনি উৎসাহভরে বলিলেন, “এই জন্যই যদিও মাতার স্নেহ কতকাংশে এতদপেক্ষা মহত্তর, তথাপি পৃথিবীশুদ্ধ লোক স্বামী-স্ত্রীর প্রেমকেই আদর্শ বলিয়া ধরিয়া থাকে। আর কোন প্রেমেই এরূপ মনের মতন করিয়া গড়িয়া লইবার অপূর্ব্ব শক্তি নাই। প্রেমাস্পদকে যেমনটী কল্পনা করা যায়, সত্য সত্যই সে ঠিক তেমনটাই হইয়া উঠে, এই প্রেমে প্রেমাস্পদকে রূপান্তরিত করিয়া দেয়।”

 তৎপরে কথাপ্রসঙ্গে জাতীয় আদর্শের কথা উঠিল এবং স্বামিজী বিদেশপ্রত্যাগত পান্থ কিরূপ আনন্দের সহিত আবার স্বদেশবাসী নরনারীগণকে স্বাগত করে তাহার উল্লেখ করিলেন। মানুষ সারা জীবন ধরিয়া অজ্ঞাতসারে এরূপ শিক্ষালাভ করিয়া আসে যে, সে স্বদেশবাসীর মুখে এবং আকৃতিতে ভাবের ক্ষীণতম লহরটী পর্য্যন্ত অনুধাবন করিতে পারে।

 পথে যাইতে যাইতে আমাদের পুনরার একদল পাদচারী সন্ন্যাসীর সহিত সাক্ষাৎ হইল। তাঁহাদের কৃচ্ছানুরাগ দেখিয়া

৬৪