শিশুগণের সহিত খেলা করিলাম, ফর্গেট্-মি-নট্, ফুল তুলিলাম এবং সবে ফসল-কাটা ক্ষেতগুলিতে একদল কৃষক কোনও সময়োচিত আমোদ-প্রমোদ উপলক্ষে গান করিতেছে, দেখিতে লাগিলাম। স্বামিজী প্রায় এগারটার সময় অন্ধকারে নিজ নৌকার ফিরিবার পথে আমাদের কাছ দিয়া যাইতে যাইতে গ্রাম্য লোকদের মধ্যে মুদ্রা-প্রচলনের ফলাফল সম্বন্ধে আমাদের ঘোর তর্কের শেষাংশটী শুনিতে পাইয়াছিলেন।
পরদিন আমরা তুষারমণ্ডিত পর্বতরাজি দ্বারা পরিবেষ্টিত এক মনোরম উপত্যকার উপস্থিত হইলাম। ইহাই কাশ্মীর উপত্যকা নামে পরিচিত; কিন্তু হয়ত শ্রীনগর উপত্যকা বলিলে ইহার ঠিক ঠিক পরিচয় দেওয়া হয়। ইসলামাবাদ নগরের নিজের একটী উপত্যকা আছে সেটী নদীর আরও উপরিভাগে এবং তথায় পৌঁছিতে আমাদিগকে পর্ব্বতগুলির মধ্য দিয়া ঘুরিয়া ফিরিয়া যাইতে হইয়াছিল। উপরে সুনীল গগন, আর যে জলপথ বাহিয়া যাইতেছিলাম তাহাও নীল। সে পথে মাঝে মাঝে হরিদ্বর্ণ-পত্রসমন্বিত মৃণালের বড় বড় দল, হেথা-সেথা দু-একটা কোকনদ এবং উভয় তীরে ক্ষেতের পর ক্ষেত—আসিবার সময় তাহাদের মধ্যে কতকগুলিতে কৃষকগণ ফসল কাটিতেছে, দেখিলাম। সমস্ত দৃশ্যটীতে নীল হরিৎ এবং শ্বেতের অপরূপ নিখুঁত সমন্বয়ে কি এমন একটা খোল্তাই হইয়াছিল যে, ক্ষণকালের জন্য ইহার সৌন্দর্য্য সম্যক্রূপে উপভোগ করিতে যাইয়া হৃদয় একরূপ করুণ-রসে আপ্লুত হইল।
সেই প্রথম প্রভাতটীতে ক্ষেতের উপর দিয়া লম্বা একচোট
৬৮