পাতা:স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে - ভগিনী নিবেদিতা (১৯৫১).pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বামিজীর সহিত হিমালয়ে
উঠ, জাগ, স্বপ্ন নহে আর!

স্বপনরচনা শুধু ভবে―
কৰ্ম্ম হেথা গাঁথে মালা যার
নাহি সূত্র, বৃত্তমূলহীন
ভাল-মন্দ পুষ্প ভাবনার,
জন্ম লভে গর্ভে অসতের,
—সত্যের মৃদুল শ্বাসে ধায়
আদিতে যে শূন্য ছিল তায়!

অভী হও, দাঁড়াও নির্ভয়ে

সত্যগ্রাহী সত্যের আশ্রয়ে,
মিশি সত্যে যাও এক হয়ে,
মিথ্যা কৰ্ম্মস্বপ্ন ঘুচে যাক্—
কিম্বা থাকে স্বপ্নলীলা যদি
হের সেই, সত্যে গতি যার,
থাক্ স্বপ্ন নিষ্কাম সেবার

আর থাক্ প্রেম নিরবধি।

 ২৬শে জুন। আচার্য্যদেব আমাদের সকলকে ছাড়িয়া একাকী কোন শান্তিপূর্ণ স্থানে যাইবার জন্য উৎসুক হইয়াছিলেন। কিন্তু আমরা ইহা না জানিয়া তাঁহার সহিত ক্ষীরভবানী নামক শুভ্র প্রস্রবণগুলি দেখিতে যাইবার জন্য জেদ করিতে লাগিলাম। শুনিলাম, ইতঃপূর্ব্বে কখনও কোন ঈশাহী বা মুসলমান তথায় পদার্পণ করে নাই এবং আমরা ইহার দর্শনলাভে যে কতদূর কৃতার্থ হইয়াছি, তাহা বর্ণনাতীত; কারণ ভগবান যেন স্থির করিয়া রাখিয়াছিলেন যে, পরে এই নামটাই আমাদের নিকট সর্ব্বাপেক্ষা পবিত্র হইয়া উঠিবে। এই সম্পর্কে একটা কৌতুকাবহ ঘটনা ঘটিয়াছিল। আমাদের মুসলমান মাঝিগণ আমাদিগকে জুতা পায়ে দিয়া নামিতে দিল না—কাশ্মীরের মুসলমানধর্ম্ম এত হিন্দু-ভাব-বহুল! ইহার আবার চল্লিশ জন ‘ঋষি’ আছেন এবং উপবাসী হইয়া তাঁহাদের মন্দিরদর্শন করিতে হয়।

 ২৯শে জুন। আর একদিন আমরা নিজেরাই বিনা আড়ম্বরে দুই-তিন সহস্র ফিট উচ্চ একটী ক্ষুদ্র পর্ব্বতের শিখরদেশে খুব

৭৬