দিবার সময় যেন বহু উচ্চে উঠিয়া গেলেন। তিনি বলিয়া উঠিলেন, “জনক হওয়া কি এত সোজা?―সম্পূর্ণরূপে অনাসক্ত হইয়া রাজসিংহাসনে বসা? ধনের বা যশের অথবা স্ত্রী-পুত্রের জন্য কোন খেয়াল না রাখা?—পাশ্চাত্যে আমাকে বহু লোকে বলিয়াছে যে, তাহারা এই অবস্থায় উপনীত হইয়াছে। কিন্তু আমি এইটুকুমাত্র বলিতে পারিয়াছিলাম এইরূপ সব মহাপুরুষ ত ভারতবর্ষে জন্মান না!”
এবং তৎপরে তিনি অন্য দিকটীর কথা কহিতে লাগিলেন।
শ্রোতৃগণের মধ্যে একজনকে তিনি বলিলেন, “একথা মনে মনে বলিতে এবং তোমার সন্তানদিগকে শিখাইতে কখনও ভুলিও না যে,
মেরুসর্ষপয়োর্যদ্ যৎ সূর্য্যখদ্যোতয়োরিব।
সরিৎসাগরয়োর্যদ্ যৎ তথা ভিক্ষুগৃহস্থয়োঃ।।
—মেরু এবং সর্ষপে যে প্রভেদ, প্রচণ্ড সূর্য্য এবং খাদ্যোতে যে প্রভেদ, অনন্ত সমুদ্র এবং ক্ষুদ্র গোষ্পদে যে প্রভেদ, সন্ন্যাসী এবং গৃহীতেও সেই প্রভেদ।”
“সৰ্ব্বং বস্তু ভয়ান্বিতং ভুবি নৃণাং বৈরাগ্যমেবভয়ম্।”—
পৃথিবীতে সকল বস্তুতেই ভয় আছে, শুধু মানবের বৈরাগ্যই ভয়রহিত।
“ভণ্ড সাধুরাও ধন্য এবং যাহারা ব্রত উদ্যাপন করিতে অক্ষম হইয়াছে তাহারাও ধন্য; কারণ তাহারাও আদর্শের শ্রেষ্ঠতা-বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়াছে এবং এইরূপে কতকাংশে অপরের সফলতার কারণ।”
৮৩