এবং পরক্ষণেই সেই ভাবেরই রূপান্তরস্বরূপ অপর ভাবটা লইয়া তিনি আবৃত্তি করিলেন―
কিশোরীর প্রেম নিবি আয়, প্রেমের জোয়ার বয়ে যায়;
বইছে রে প্রেম শতধারে, যে যত চায় তত পায়।
প্রেমের কিশোরী, প্রেম বিলাচ্ছেন সাধ করি,
রাধার প্রেমে বলরে হরি।
প্রেমে প্রাণ মত্ত করে প্রেমতরঙ্গে প্রাণ মাতায়,
রাধার প্রেমে হরি বলে আয়, আয়, আয়॥
তিনি এত তন্ময় হইয়া গিয়াছিলেন যে, তাঁহার প্রাতরাশ প্রস্তুত হইবার অনেকক্ষণ পর পর্য্যন্ত পড়িয়া রহিল এবং অবশেষে “যখন এই সব ভক্তির প্রসঙ্গ চলিতেছে, তখন আর খাবারে কি দরকার?”―এই বলিয়া তিনি অনিচ্ছাপূর্ব্বক উঠিয়া যাইলেন এবং অতি সত্বরই ফিরিয়া আসিয়া সেই বিষয়ের পুনরালোচনায় প্রবৃত্ত হইলেন।
কিন্তু হয় এই সময়েই, না হয় অপর কোনও সময়ে তিনি বলিয়াছিলেন যে, যাহার নিকট হইতে তিনি বড় বড় কার্য্যের প্রত্যাশা রাখেন, তাহার নিকট তিনি রাধাকৃষ্ণের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন না। কঠোর এবং আগ্রহবান্ কর্ম্মীর জনক শিব এবং কর্ম্মীর তাঁহারই পদে উৎসৃষ্ট হওয়া উচিত।
পরদিন তিনি আমাদিগকে শ্রীরামকৃষ্ণের একটী চমৎকার উপদেশ শুনাইলেন, তাহাতে অপরের গুণদোষর্শিগণ মৌমাছি বা মাছির সহিত তুলিত হইয়াছে। যাহারা মধু অন্বেষণ করিয়া লয় তাহারাই মৌমাছি; আর যাহারা বাছিয়া বাছিয়া ঘায়ে বসে তাহারাই মাছি।
৮৯