স্বামি-শিষ্য-সংবাদ। তটভূমি মুখরিত হওয়ায় ভাগীরথী যেন ঢল ঢল হাবভাবে নৃত্যু করিতে লাগিলেন। যাইতে যাইতে পথিমধ্যে স্বামিজী শিষ্যকে বলিলেন,-“ঠাকুর আমায়- বলেছিলেন, “তুই, কাধে করে আমায় যেখানে নিয়ে যাবি, আমি সেখানেই যাব ও থাকব। তা গাছতুলাই কি, আর কুটিরই কি। সে জন্যই আজ আমি স্বয়ং তাকে কঁধে করে, নূতন মঠভূমিতে নিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চয় জান্বি, বহু কাল পৰ্য্যন্ত ‘‘বহুজনহিতায় ঠাকুর ঐ স্থানে স্থির হয়ে থাকবেন।” শিষ্য। ঠাকুর আপনাকে কখন এ কথা বলিয়াছিলেন ? স্বামিজী। ( মাঠের সাধুগণকে দেখাইয়া । ওদের মুখে শুনিস্ নি?--কাশীপুরের বাগানে। শিষ্য। ওঃ ! সেই সময়েই বুঝি ঠাকুরের গৃহস্থ ও সন্ন্যাসী ভক্তদের ভিতর সেবাধিকার লইয়া দলাদলি হইয়াছিল ? স্বামিজী। হাঁ, “দলাদলি’ ঠিক নয়, একটু মন-কসােকসি হয়েছিল। জানবি, যারা ঠাকুরের ভক্ত, যারা ঠিক ঠিক তঁর কৃপা লাভ করেছেন-ত গোরস্থই হ’ন আর সন্ন্যাসীই হ’ন- তাদের ভিতর দল ফল নাই, থাকতেই পারে না। তবে ওরূপ একটু আধটু মন-কসাকসির কারণ কি, তা জানিস্ ? প্ৰত্যেক ভক্ত ঠাকুরকে আপনি আপনি বুদ্ধির রঙ্গে রঙ্গিয়ে, এক এক জনে এক এক রকম দেখে ও বোঝে। তিনি যেন মহাসুৰ্য্য, আর আমরা যেন প্ৰত্যেকে ঐক এক রকম রঙ্গিন কাচ" চোখে দিয়ে সেই এক সুৰ্য্যকে নানা রঙ্গবিশিষ্ট বলে দেখছি। অবশ্য, এ কথাও ঠিক যে, কালে এই থেকেই দলের সৃষ্টি হয়। তবে যারা সৌভাগ্যক্রমে
পাতা:স্বামি শিষ্য সংবাদ (পূর্ব কাণ্ড).djvu/১৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।