পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার ঠুমরনীতি ما۰ د ইহারা মানুষ মহে, এমন কি পশু-নামেরও যোগ্য নহে। আইনের দ্বারা অথবা প্রবল উত্তেজনাপূর্ণ আন্দোলনের দ্বারা কোন সামাজিক দোষ প্রতিকার করিবার চেষ্টার ফুল এইরূপই হয়। - কোনরূপ কল্যাণসাধনের জন্যও এইরূপ উত্তেজনাপ্রস্থত আন্দোলনের বিরুদ্ধে ইতিহাসের এই সাক্ষ্য বিদ্যমান। আমি ইহা দেখিয়াছি, নিজ অভিজ্ঞতা হইতে আমি ইহা শিখিয়াছি। এই কারণেই আমি এইরূপ দোষারোপকারী কোন সমিতির সহিত যোগ দিতে পারি না । দোষারোপ বা নিন্দাবাদের প্রয়োজন কি ? সকল সমাজেই দোষ আছে। সকলেই তাহ জানে। আজকালকার ছোট ছেলে পর্যন্ত তাহ জানে। সেও মঞ্চে দাড়াইয়া হিন্দুসমাজের গুরুতর দোষগুলি সম্বন্ধে আমাদিগকে রীতিমত একটি বক্তৃতা শুনাইয়া দিতে পারে। যে-কোন অশিক্ষিত বৈদেশিক এক নিঃশ্বাসে ভূপ্রদক্ষিণ করিবার জন্য ভারতে আসিয়া থাকেন ; তিনিই তাড়াতাড়ি রেলভ্রমণের পর "ভারতবর্ষের মোটামুটি একটা ধারণা করিয়া লইয়া ভারতের ভয়াবহ অনিষ্টকর প্রথাসম্বন্ধে খুব পাণ্ডিত্যপূর্ণ বক্তৃতা দিয়া থাকেন। আমরা তাহদের কথা স্বীকার করিয়া থাকি । সকলেই দোষ দেখাইয়া দিতে পারে ; কিন্তু যিনি এই সমস্যা হইতে উত্তীর্ণ হইবার পথ দেখাইয় দিতে পারেন, তিনিই মানবজাতির যথার্থ বন্ধু। সেই জলমগ্ন বালক ও দার্শনিকের গল্পে—দার্শনিক যখন বালককে গম্ভীরভাবে উপদেশ দিতেছিলেন, তখন সেই বালক যেমন বলিয়াছিল, ‘আগে আমাকে জল হইতে তুলুন, পরে আপনার উপদেশ শুনিব, সেইরূপ এখন আমাদের দেশের লোক চীংকার করিয়া বলিতেছে, “আমরা যথেষ্ট বক্তৃতা শুনিয়াছি, অনেক সমিতি দেখিয়াছি, ঢের কাগজ পড়িয়াছি ; এখন আমরা এমন লোক চাই, যিনি আমাদের হাত ধরিয়া এই মহাপঙ্ক হইতে টানিয়া তুলিতে পারেন। এমন লোক কোথায় ? এমন লোক কোথায়, যিনি আমাদিগকে যথার্থ ভালবাসেন ? এমন লোক কোথায়, যিনি আমাদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন ? এইরূপ লোক চাই। এইখানেই আমার এই-সকল সংস্কার-আন্দোলনের সহিত সম্পূর্ণ মতভেদ। প্রায় শত বর্ষ ধরিয়া এই সংস্কার-আন্দোলন- চলিতেছে । কিন্তু উহার দ্বারা অতিশয় নিন্দ ও,বিদ্বেষপূর্ণ সাহিত্যবিশেষের স্বষ্টি ব্যতীত আর কি কল্যাণ হইয়াছে ? ঈশ্বরেচ্ছায় ইহা না হইলেই ভাল ছিল। তাহার প্রাচীন সমাজের কঠোর সমালোচনা করিয়াছেন, উহার উপর যথাসাধ্য দোযুরোপ করিয়াছেন,