পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5 e 8 স্বামীজীর बानी ও রচনা উহার তীব্র নিন্দ করিয়াছেন ; শেষে প্রাচীন সমাজের লোকের তাহাদের স্বর ধরিয়াছেন, চিলটি খাইয়া পাটকেলটি মারিয়াছেন ; আর তাহার ফল হইয়াছে এই যে, প্রত্যেকটি দেশীয় ভাষায় এমন এক সাহিত্যের স্বষ্টি হইয়াছে, যাহাতে সমগ্র জাতির—সমগ্র দেশের লজ্জিত হওয়া উচিত ! ইহাই কি সংস্কার ? ইহাই কি সমগ্র জাতির গৌরবের পথ ? ইহা কাহার দোষ ? অতঃপর আর একটি গুরুতর বিষয় বিবেচনা করিতে হইবে । এখানে— ভারতে আমরা বরাবর রাজ-শাসনাধীনে কাটাইয়াছি—রাজারাই আমাদের জন্য চিরদিন বিধান প্রস্তুত করিয়াছেন। এখন সেই রাজারা নাই, এখন আর এ বিষয়ে অগ্রসর হইয়া পথ দেখাইবার কেহ নাই। সরকার সাহস করেন না। সরকারকে সাধারণের মতামতের গতি দেখিয়া নিজ কার্যপ্রণালী স্থির করিতে হয়। কিন্তু নিজেদের সমস্তাপুরণে সমর্থ, সাধারণের কল্যাণকর, প্রবল জনমত গঠিত হইতে সময় লাগে—অনেক সময় লাগে। এই মত গঠিত হইবার পুর্ব পর্যন্ত আমাদিগকে অপেক্ষা করিতে হইবে । সুতরাং সমুদয় সমাজসংস্কারসমস্তাটি এইরূপ দাড়ায়—সংস্কার যাহারা চায়, তাহারা কোথায় ? আগে তাহাদিগকে প্রস্তুত কর । সংস্কারপ্রার্থী লোক কই ? অল্পসংখ্যক কয়েকটি লোকের নিকট কোন বিষয় দোষযুক্ত বলিয়া বোধ হইয়াছে, অধিকাংশ ব্যক্তি কিন্তু তাহা এখনও বোঝে নাই । এখন এই অল্পসংখ্যক ব্যক্তি যে জোর করিয়া অপর সকলের উপর নিজেদের মনোমত সংস্কার চালাইবার চেষ্টা করেন, তাহা তো অত্যাচার ; ইহার মতো প্রবল অত্যাচার পৃথিবীতে আর নাই । অল্প কয়েকজন লোকের নিকট কতকগুলি বিষয় দোষযুক্ত হইলেই সমগ্র জাতির হৃদয় স্পর্শ করে না । সমগ্র জাতি নড়ে-চড়ে না কেন ? প্রথমে সমগ্র জাতুিকে শিক্ষা দাও, ব্যবস্থা-প্রণয়নে সমর্থ একটি দল গঠন কর ; বিধান আপনাআপনি আসিবে। প্রথমে যে শক্তিবলে—যাহার অনুমোদনে বিধান গঠিত । হইবে, তাহা স্বষ্টি কর । এখন রাজারা নাই ; যে নূতন শক্তিতে-য়ে নূতন সম্প্রদায়ের সম্মভিতে নূতন ব্যবস্থা প্রণীত হইবে, সে লোকশক্তি কোথায় ? প্রথমে সেই লোকশক্তি গঠন কর । সুতরাং সমাজসংস্কারের জন্য প্রথম কর্তব্যলোকশিক্ষা। এই শিক্ষা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করিতেই হইবে।” গত শতাব্দীতে যে সকল সংস্কারের জন্য আন্দোলন হুইয়াছে, তাহার অধিকাংশই পোশাকী ধরনের। এই সংস্কার-চেষ্টাগুলি কেবল প্রথম দুই