পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S R o স্বামীজীর বাণী ও রচনা মধ্যে অধিকাংশই আজকাল প্রচলিত নাই। জ্ঞানকাণ্ডে বেদের আধ্যাত্মিক উপদেশসমূহ লিপিবদ্ধ—উহা উপনিষদ বা 'বেদান্ত’ নামে পরিচিত। দ্বৈতবাদী, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী বা অদ্বৈতবাদী আচার্য ও দার্শনিকগণ—সকলেই উহাকে উচ্চতম প্রমাণ বলিয়া স্বীকার করিয়া গিয়াছেন। ভারতীয় প্রত্যেক দর্শন ও প্রত্যেক সম্প্রদায়কেই দেখাইতে হয় যে, তাহার দর্শন বা সম্প্রদায় উপনিষদ-রূপ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত । যদি কেহ তাহ না দেখাইতে পারেন, তবে সেই দর্শন ব। সম্প্রদায় প্রচলিত ধর্মমতের বিরোধী বলিয়া পরিগণিত হইবে । সুতরাং বর্তমানকালে সমগ্র ভারতের হিন্দুকে যদি কোন সাধারণ নামে পরিচিত করিতে হয়, তবে তাহাদিগকে সম্ভবতঃ বৈদাস্তিক’ বা বৈদিক’—এই দুইটির মধ্যে যেটি তোমাদের ইচ্ছা বলিলেই ঠিক বলা হইবে । আর আমি বৈদাস্তিক ধর্ম ও ‘বেদান্ত’ শব্দ দুইটি ঐ অর্থেই সর্বদা ব্যবহার করিয়া থাকি । আমি আর একটু স্পষ্ট করিয়৷ এইটি বুঝাইতে চাই ; কারণ ইদানীং অনেকের পক্ষে বেদান্তদর্শনের ‘অদ্বৈত ব্যাখ্যাকেই ‘বেদান্ত’ শব্দের সহিত সমার্থক-রূপে প্রয়োগ করা একটা চলিত প্রথা হইয় দাড়াইয়াছে । আমরা সকলেই জানি, উপনিষদকে ভিত্তি করিয়া যে-সকল বিভিন্ন দর্শনের স্বষ্টি হইয়াছে, অদ্বৈতবাদ তাহাদের অন্যতম মাত্র । উপনিষদের প্রতি অদ্বৈতবাদীর যতটা শ্রদ্ধা ভক্তি আছে, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদীরও ততটা আছে ; এবং অদ্বৈতবাদীরা তাহাদের দর্শন বেদান্ত-প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত বলিয়া যভট দাবি করেন, বিশিষ্টদ্বৈতবাদীরাও ততটাই করিয়া থাকেন। দ্বৈতবাদী ও ভারতীয় অন্যান্য সম্প্রদায়গুলিও এইরূপ করিয়া থাকেন । ইহা সত্ত্বেও সাধারণ লোকের মনে বৈদাস্তিক’ ও ‘অদ্বৈতবাদী সমার্থক হইয়া দাড়াইয়াছে ; সম্ভবতঃ ইহার কিছু কারণুও আছে। যদিও বেদই আমাদের প্রধান শাস্ত্র, তথাপি বেদের পরবর্তী স্মৃতি-পুরাণও আমাদের শাস্ত্র ; কারণ সে গুলিতে বেদেরই মত বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যাত ও নানাবিধ দৃষ্টাস্ত দ্বারা সমর্থিত হইয়াছে। এগুলি অবহু বেদের মতো প্রামাণিক নহে । আর ইহাও শাস্ত্রবিধান যে, যেখানে শ্রীতি ও স্মৃতির মধ্যে কোন বিরোধ হইবে, সেখানে শ্রুতির মত গ্রাহ হইবে এবং স্মৃতির, মত পরির্ত্যাগ করিতে হইবে। এখন আমরা দেখিতে পাই, অদ্বৈতকেশরী শঙ্করাচার্ধ ও তাহার অনুগামী আচার্যগণের ব্যাখ্যায় প্রমাণরূপে উপনিষদ অধিক পরিমাণে