পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

》\う。 স্বামীজীর বাণী ও রচনা মস্তিষ্ক আবিলতাপূর্ণ ও অসাড়, তোমাদের শরীর দুর্বল। শরীরের এ অবস্থা পরিবর্তন করিতে হইবে । শারীরিক দৌর্বলাই সকল অনিষ্টের মূল, আর কিছু নহে। গত কয়েক শত বৎসর যাবৎ তোমরা নানাবিধ সংস্কার, অাদর্শ প্রভৃতির কথা কহিয়াছ, কিন্তু কাজের সময় আর তোমাদের সন্ধান পাওয়া যায় না । ক্রমশ: তোমাদের আচরণে সকলে বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছে ; আর ‘সংস্কার’ নামটা পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবীর উপহাসের বস্তু হইয়া দাড়াইয়াছে । ইহার কারণ কি ? তোমাদের জ্ঞানের কি কিছু কমতি আছে ? জ্ঞানের কমতি কোথায় ? তোমরা ষে অতিরিক্ত জ্ঞানী ! সকল অনিষ্টের মূল কারণ এই যে, তোমরা দুর্বল, অতি দুর্বল—তোমাদের শরীর দুর্বল, মন" দুর্বল, তোমাদের আত্মবিশ্বাস একেবারেই নাই । শত শতাব্দী যাবৎ অভিজাত সম্প্রদায়, রাজা ও বৈদেশিকরা অত্যাচার করিয়া তোমাদিগকে পিষিয়া ফেলিয়ছে ; হে ভ্রাতৃগণ, তোমাদের স্বজনগণ তোমাদের সব বল হরণ করিয়াছে । তোমরা এখন পদদলিত, ভগ্নদেহ, মেরুদণ্ডহীন কীটের মতো হইয়াছ । কে আমাদিগকে এখন বল দিবে ? আমি বলিতেছি, আমাদের এখন চাই বল, চাই বীর্য । এই বীর্যলাভের প্রথম উপায়—উপনিষদে বিশ্বাসী হওয়া এবং বিশ্বাস করা যে, “আমি আত্মা, তরবারি আমাকে ছেদন করিতে পারে না, কোন যন্ত্র আমাকে ভেদ করিতে পারে না, অগ্নি আমাকে দগ্ধ করিতে পারে না, বায়ু শুষ্ক করিতে পারে না, আমি সর্বশক্তিমান, আমি সর্বজ্ঞ । অতএব এই আশা প্ৰদ পরিত্রণকারী বাক্যগুলি সর্বদ উচ্চারণ কর ; বলি ও ন! —আমরা দুর্বল । আমরা সব করিতে পারি। আমরা কি না করিতে পারি ? আমাদের দ্বারা সবই হইতে পারে। আমাদের প্রত্যেকের ভিতবে সেই মহিমময় আত্মা রহিয়াছেন। আত্মায় বিশ্বাসী হইতে হইবে । নচিকেতার মতে বিশ্বাসী হও । নচিকে তার পিত। যখন যুক্ত করিতেছিলেন, তখন নচিকেতার অন্তরে শ্রদ্ধা প্রবেশ করিল। আমার ইচ্ছ। — তোমাদের প্রত্যেকের ভিতর সেই শ্রদ্ধা আবির্ভূত হউক, তোমাদের প্রত্যেকেই বীরদৰ্পে দণ্ডায়মান হইয়। ইঙ্গিতে জগং-আলোড়নকারী মহামনীন সম্পন্ন মহাপুরুষ হও, সর্বপ্রকারে অনস্ত ঈশ্বরতুল্য হও, আমি তোমাদের সকলকেই এইরূপ দেখিতে চায় । উপনিষদ হইতে তোমরা এইরূপ শক্তিলাভ করিবে, উহা হইতে তোমরা এই বিশ্বাস পাইবে । এ সবই উপনিষদে রহিয়াছে।