পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> 8切ア স্বামীজীর রাণী ও রচনা মুখমণ্ডল ব্রহ্মবিদের ন্যায় উদ্ভাসিত দেখিতেছি। যখন তুমি ঈশ্বরকে জানিবে, তখন তোমার মুখ, তোমার কণ্ঠস্বর, তোমার সমগ্র আকৃতিই পরিবর্তিত হইয়া যাইবে । তখন তুমি মানবজাতির নিকট এক মহাকল্যাণস্বরূপ হইবে। ঋষির শক্তি কেহ প্রতিরোধ করিতে পারে না । ইহাই ঋষিত্ব এবং ইহাই আমাদের ধর্মের আদর্শ। অবশিষ্ট যাহা কিছু —পরস্পর কথা-বার্তা, যুক্তি-বিচার, দর্শন, দ্বৈতবাদ, অদ্বৈতবাদ, এমন কি বেদ পর্যন্ত – এই ঋষিত্বলাভের প্রস্তুতিমাত্র, ও-গুলি গৌণ। ঋষিত্বলাভই মুখ্য । বেদ, ব্যাকরণ, জ্যোতিষাদি— সবই গৌণ। তাহাই পরা বিদ্যা, যাহা দ্বারা আমরা সেই অক্ষর পুরুষকে জানিতে পারি। যাহার এই তত্ত্ব সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন, তাহারাই বৈদিক ঋষি ঋষি-অর্থে আমরা এক শ্রেণীর বিশেষ অবস্থাপন্ন ব্যক্তিকে বুঝিয়। থাকি। যথার্থ হিন্দু হইতে গেলে আমাদের প্রত্যেককেই জীবনের কোননা-কোন অবস্থায় এই ঋষিত্ব লাভ করিতে হইবে, আর ঋষিত্বলাভই হিন্দুর নিকট মুক্তি। কতকগুলি মতবাদে বিশ্বাস, সহস্ৰ সহস্র মন্দির দর্শন বা পৃথিবীতে যত নদী আছে সবগুলিতে স্নান করিলে হিন্দুমতে মুক্তি হইবে না। ঋষি হইলে, মন্ত্রদ্রষ্ট হইলে তবেই মুক্তিলাভ হইবে । পরবর্তী সময়ের কথা আলোচনা করিলে আমরা দেখিতে পাই, তখন সমগ্র জগত-আলোড়নকারী মহাপুরুষগণ—শ্রেষ্ঠ অবতারগণ জন্মগ্রহণ করিয়াছেন । অবতারের সংখ্যা অনেক । ভাগবতের মতে অবতার অসংখ্য ; তন্মধ্যে রাম ও কৃষ্ণই ভারতে বিশেষভাবে পূজিত হইয়া থাকেন । এই প্রাচীন বীরযুগের আদর্শ–সত্যপরায়ণতা ও নীতির সাকার মূর্তি, আদর্শ তনয়, আদর্শ পতি, আদর্শ পিতা, সর্বোপরি আদর্শ রাজা রামচন্দ্রের চরিত্র অঙ্কন করিয়া মহর্ষি বাল্মীকি আমাদের সম্মুখে স্থাপন করিয়াছেন। এই মহাকবি যে ভাষায় রামচরিত্র বর্ণনা করিয়াছেন, তাহা অপেক্ষা শুদ্ধতর, মধুরতর, অথচ সরলতর ভাষা আর হইতে পারে না । আর সীতার কথা কি বলিব ! তোমরা জগতের সমগ্র প্রাচীন সাহিত্য অধ্যয়ন করিয়া নিঃশেষ করিতে পারে, আমি তোমাদিগকে নি:সংশয়ে বলিতে পারি যে, জগতের ভাবী সাহিত্যসমূহও নিঃশেষ করিতে পারে, কিন্তু আর একটি সীতার চরিত্র বাহির করিতে পরিবে না। সীতাচরিত্র অসাধারণ ; ঐ চরিত্র ঐ একবার মাত্রই চিত্রিত হইয়াছে, আর কখনও হয় নাই, হইবেও না। রাম হয়তো অনেক হইয়াছেন, কিন্তু