পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় মহাপুরুষগণ • 2 t > সন্তুষ্ট হইতে পাবুে না । ইহাই সেই অতি প্রাচীন, প্রাচীনতম সমস্তা—যাহা ব্ৰহ্মস্বত্রে বিচারিত হইয়াছে, যাহা লইয়া বনবাসকালে ত্ৰৌপদী যুধিষ্টরের সহিত বিচার করিয়াছিলেন ; যদি একজন সগুণ, সম্পূর্ণ দয়াময়, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর থাকেন, তবে এই মরককুণ্ড–সংসারের অস্তিত্ব কেন ? কেন তিনি ইহা স্বষ্টি করিলেন ? - তাহাকে একজন মহাপক্ষপাতী ঈশ্বর বলিতে হইবে । ইহার কোনরূপ মীমাংসাই হয় নাই ; কেবল গোপীপ্রেম সম্বন্ধে শাস্ত্রে যাহা পড়িয়া থাকে, তাহাতেই ইহার মীমাংসা হইয়াছে। তাহারা কৃষ্ণের প্রতি কোন বিশেষণ প্রয়োগ করিতে চাহিত না ; তিনি যে স্বষ্টিকর্তা, তিনি যে সর্বশক্তিমান— তাহাও তাহারা জানিতে চাহিত না । তাহার কেবল বুঝিত—তিনি প্রেমময় ; ইহাই তাহাদের পক্ষে যথেষ্ট । গোপীরা কৃষ্ণকে কেবল বৃন্দাবনের কৃষ্ণ বলিয়া বুঝিত। সেই বহু সেনাবাহিনীর নেতা রাজাধিরাজ কৃষ্ণ তাহদের নিকট বরাবর সেই রাখালবালকই ছিলেন । ‘ন ধনং ন জনং ন কবিতাং সুন্দরীং বা জগদীশ কাময়ে । মম জন্মনি জন্মনীশ্বরে ভবতা ভক্তিরহৈতুকী ত্বয়ি ॥’ —হে জগদীশ, আমি ধন জন কবিতা বা সুন্দরী—কিছুই প্রার্থনা করি না ; হে ঈশ্বর, জন্মে জন্মে যেন তোমার প্রতি আমার অহৈতুকী ভক্তি থাকে। ধর্মের ইতিহাসে ইহা এক নূতন অধ্যায়—এই অহৈতুকী ভক্তি, এই নিষ্কাম কর্ম, আর মানুষের ইতিহাসে ভারতক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ অবতার কৃষ্ণের মুখ হইতে সর্বপ্রথম এই তত্ত্ব নির্গত হইয়াছে । ভয়ের ধর্ম, প্রলোভনের ধর্ম চিরদিনের জন্য চলিয়া গেল ; নরকের ভীতি ও স্বৰ্গ মুখের প্রলোভন সবেও এই অহৈতুকী ভক্তি ও নিষ্কাম কর্ম-রূপ শ্রেষ্ঠ আদর্শের অভু্যদয় হইল । এ প্রেমের মহিমা কি আর বলিব ! এইমাত্র তোমাদিগকে বলিয়াছি যে, গোপীপ্রেম উপলব্ধি করা বড়ই কঠিন । আমাদের মধ্যেও এমন নির্বোধের অভাব নাই, যাহারা শ্ৰীকৃষ্ণের জীবনের এই অতি অপুর্ব অংশের অদ্ভূত তাৎপর্য বুঝিতে পারে না। আমি আবার বলিতেছি, আমাদেরই স্বজাতি এমন অনেক অশুদ্ধচিত্ত নির্বোধ আছে, যাহারা গোপীপ্রেমের মাম শুনিলে উহা অতি অপবিত্র ব্যাপার ভাবিয়া ভয়ে দশহাত• পিছাইয়া যায়। তাহাদিগকে -- -- শিক্ষাষ্টকৰ্ম্ম-চৈতষ্ঠচরিতামৃত