পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৭৩

శ్రీ 6 স্বামীজীর বাণী ও রচনা নূতন নূতন অনুষ্ঠানপদ্ধতি দাড়াইয়াছিল, তিনি সেগুলি গ্রহণ করিয়া যথাসাধ্য ংস্কার করিলেন এবং নূতন নূতন অনুষ্ঠানপদ্ধতি, নৃতন নূতন উপাসনাপ্রন্থালী স্বষ্টি করিয়া ঐগুলি যাহাদের পক্ষে অত্যাবশ্যক, তাহাদিগকে উপদেশ দিতে লাগিলেন । অথচ তিনি ব্রাহ্মণ হইতে চণ্ডাল পর্যন্ত সকলের নিকট উচ্চতম আধ্যাত্মিক উপাসনার পথ উন্মুক্ত রাখিলেন । এইরূপে রামানুজের প্রচারকার্য চলিল। তাহার প্রচারের প্রভাব চতুর্দিকে বিস্তৃত হইতে লাগিল, আর্যাবর্তে ঐ তরঙ্গের আঘাত লাগিল । সেখানে কয়েকজন আচার্য ঐভাবে অনুপ্রাণিত হইয়া কাজ করিতে লাগিলেন ; কিন্তু ইহা বহুদিন পরে—মুসলমান-শাসনকালে ঘটিয়াছিল । অপেক্ষাকৃত আধুনিক আর্যাবর্তবাসী আচার্যগণের মধ্যে চৈতন্যই শ্রেষ্ঠ । রামানুজের সময় হইতে ধর্মপ্রচারে একটি বিশেষত্ব লক্ষ্য করিও ; তখন হইতে সর্বসাধারণের জন্য ধর্মের দ্বার খুলিয়া দেওয়া হয়। শঙ্করের পূর্ববর্তী সুচার্যগণের যেমন ইহাই ছিল মূলমন্ত্র, রামানুজের পরবর্তী আচার্যগণেরও তাহাই হইল । আমি জানি না, লোকে শঙ্করকে কতকটা অনুদার বলিয়া বর্ণনা করে কেন । তাহার লিখিত গ্রন্থে এমন কিছু দেখিতে পাই না, যাহাতে র্তাহার সঙ্কীর্ণতার পরিচয় পাওয়া যায় । ভগবান বুদ্ধদেবের উপদেশাবলী যেমন র্তাহার শিষ্যপ্রশিষ্যবৰ্গ দ্বারা বিকৃত হইয়াছে, তেমনি শঙ্করাচার্যের উপদেশাবলীর উপর যে সঙ্কীর্ণতার দোষ আরোপিত হয়, সম্ভবতঃ তাহাতে শঙ্করের কোন দোষ নাই, র্তাহার শিষ্যদের বুঝিবার অক্ষমতার দরুনই এ দোষ শঙ্করে আরোপিত হইয়া থাকে । আমি এখন এই উত্তরভারতের মহাপুরুষ শ্রীচৈতন্তের বিষয় কিছু উল্লেখ করিয়া এই বক্তৃতা শেষ করিব । তিনি গোপীদের প্রেমোন্মত্ত ভাবের আদর্শ ছিলেন। চৈতন্যদেব স্বয়ং একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন, তখনকার এক অতি বিচারশীল পণ্ডিতবংশে তাহার জন্ম হয়, তিনিও হ্যায়ের অধ্যাপক হইয়া তর্কে পণ্ডিতদের পরাস্ত করিয়া দিগ্বিজয়ী হন। বাল্যকাল হইতে তিনি শিথিয়াছিলেন, ইহাই জীবনের সর্বোচ্চ আদর্শ। কোন মহাপুরুষের কুপায় তাহার সমগ্র জীবন পরিবর্তিত হইয়া গেল ; তখন তিনি বাদানুবাদ, তর্ক-ন্যায়ের অধ্যাপনা পরিত্যাগ করিলেন। পৃথিবীতে যত বড় বড় ভক্তির আচার্য হইয়াছেন, গ্রেমোন্মত্ত ঐচৈতন্য র্তাহাদের অন্যতম। র্তাহার ভক্তির তরঙ্গ সমগ্র বঙ্গদেশে প্রবাহিত হইল, সকলের প্রাণে শাস্তি দিল। তাহার প্রেমের সীমা ছিল না। পুণ্যবান