পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমাদের উপুস্থিত কর্তব্য మ్రొt শত শত বৎসর ধরিয়া এই স্পৃশ্বাস্পৃশু-বিচারে ব্যস্ত, সেই জাতির অবনতি যে চরম সীমায় দাড়াইয়াছে, তাহ কি আর বলিতে হইবে ? বেদাস্তের তত্ত্বসমূহ, জগতে প্রচারিত ঈশ্বর ও আত্ম-সম্বন্ধীয় সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে মহত্তম ও গৌরবময় সিদ্ধান্তসমূহ প্রায় বিলুপ্ত হইল, গভীর অরণ্যে কয়েকজন সন্ন্যাসী দ্বারা রক্ষিত হইয়া লুক্কায়িত রহিল, অবশিষ্ট সকলে কেবল খাদ্যাখান্ত স্পৃশ্বাস্পৃষ্ঠ প্রভৃতি গুরুতর প্রশ্নসমূহের সিদ্ধান্তে নিযুক্ত রহিল। মুসলমানগণ ভারতবিজয় করিয়া—তাহারা যাহা জানিত, এমন অনেক ভাল বিষয় শিখাইয়াছিল। কারণ পৃথিবীর হীনতম ব্যক্তিও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে কিছু না কিছু শিখাইতে পারে, কিন্তু তাহারা আমাদের জাতির ভিতর শক্তিসঞ্চার করিতে পারিল না । অবশেষে আমাদের সৌভাগ্যবশতই হউক বা দুর্ভাগ্যক্রমেই হউক, ইংরেজ ভারত জয় করিল। অবশ্ব পরদেশবিজয় মাত্রেই মন্দ, বৈদেশিক শামুন নিশ্চয়ই অশুভ। তবে অশুভের মধ্য দিয়াও কখন কখন শুভ সংঘটিত হইয়া থাকে। ইংরেজের ভারতবিজয়ে এই বিশেষ শুভ ফল হইয়াছে : ইংলণ্ড ও সমগ্র ইওরোপ সভ্যতার জন্য গ্রীসের নিকট ঋণী ; ইওরোপের সব কিছুর মধ্যে গ্ৰীসই যেন কথা বলিতেছে ; উহার প্রত্যেক গৃহে, প্রত্যেক আসবাব-টিতে পর্যন্ত যেন গ্রীসের ছাপ ; ইওরোপের বিজ্ঞান শিল্প-সর্বত্র গ্রীসের ছায়া । আজ ভারতক্ষেত্রে সেই প্রাচীন গ্রীক ও প্রাচীন হিন্দু একত্র মিলিত হইয়াছে। এই মিলনের ফলে ধীরে ও নিঃশব্দে একট পরিবর্তন আসিতেছে, আমরা চতুদিকে যে উদার জীবনপ্রদ পুনরুখানের আন্দোলন দেখিতেছি, তাহা এই-সব বিভিন্ন ভাল্লের একত্র সংমিশ্রণের ফল। মানব-জীবন সম্বন্ধে আমাদের ধারণা প্রশস্ততর হইতেছে । আমরা উদারভাবে সহৃদয়তা ও সহাহভূতির সহিত মানবজীবনের সমস্তাসমূহের প্রতি দৃষ্টপাত করিতে শিখিতেছি, আর যদিও আমরা প্রথমে ভ্রান্তিবশতঃ আমাদের ভাবগুলিকে একটু সঙ্কীর্ণ করিতে চেষ্টা করিয়াছিলাম, কিন্তু এখন বুঝিতেছি যে, চতুর্দিকে যে-সব উদার ভাব দেখা যাইতেছে, সেগুলি এবং জীবনের এই প্রশস্ততর ধারণাগুলি আমাদেরই প্রাচীন শাস্ত্রনিবদ্ধ উপদেশের স্বাভাবিক পরিণতি । আমাদের পুর্বপুরুষগণ অতি প্রাচীনকালেই যে-সকল তত্ত্ব আবিষ্কার করিয়াছিলেন, সেই ভাবগুলি যদি ঠিক ঠিক কার্যে পরিণত করা যায়, তবে আমরা উদার না হইয়া থাকিতে পারি না। আমাদের শাস্ত্রোপদিষ্ট সকল বিষয়েরই লক্ষ্য—নিজ