পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

· මිං ෂ স্বামীজীর রাণী ও রচনা ক্ষুদ্র গণ্ডি হইতে বাহির হইয়া সকলের সহিত মিলিয়া মিশিয়া, পরস্পরে ভাব আদানপ্রদান করিয়া উদার হইতে উদারতর হওয়া—ক্রমশঃ সার্বভৌম ভাবে উপনীত হওয়া । কিন্তু আমরা শাস্ত্রোপদেশ না মানিয়া ক্রমশ: নিজদের সঙ্কীর্ণতর করিয়া ফেলিতেছি, বিচ্ছিন্ন করিয়া ফেলিতেছি । আমাদের উন্নতির পথে যত বিঘ্ন আছে, “আমরাই জগতের একমাত্র শ্রেষ্ঠ জাতি”–এই গোড়ামি সেগুলির একটি। ভারতকে আমি প্রাণের সহিত ভালবাসি, স্বদেশের কল্যাণের জন্য আমি সর্বদাই বদ্ধপরিকর, আমাদের প্রাচীন পুর্বপুরুষগণকে আমি বিশেষ ভক্তিশ্রদ্ধা করি, তথাপি পুথিবীর নিকট আমাদের যে অনেক জিনিস শিখিতে হইবে –এ ধারণা ত্যাগ করিতে পারি না । আমাদিগকে সকলের পদতলে বসিয়া শিক্ষালাভের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকিতে হইবে, কারণ এটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করিও যে, সকলেই আমাদিগকে মহৎ শিক্ষা দিতে পারে । আমাদেরই শ্রেষ্ঠ স্মৃতিকার মতু বলিয়াছেন : শ্রদধান: শুভাং বিদ্যামাদদাতাবরাদপি । অস্ত্যাদপি পরং ধর্মং স্ত্রীরত্বং দুষ্কৃলাদপি ॥১ —অর্থাং শ্রদ্ধাবান হইয়া নীচ জাতির নিকট হইতেও হিতকর বিদ্যা গ্রহণ করিবে, অতি অস্ত্যজ ব্যক্তির নিকট হইতেও শ্রেষ্ঠ ধর্ম শিক্ষা করিবে ইত্যাদি । সুতরাং যদি আমরা মসুর উপযুক্ত বংশধর হই, তবে তাহার আদেশ আমাদিগকে অবশ্যই পালন করিতে হইবে, যে-কোন ব্যক্তি আমাদিগকে শিক্ষা দিতে সমর্থ, তাহার নিকট হইতেই ঐহিক ব| পারত্রিক বিষয়ে শিক্ষা লইবার জন্য প্রস্তুত থাকিতে হইবে । পক্ষান্তরে ভুলিলে চলিবে না যে, আমাদেরও জগংকে বিশেষ কিছু শিক্ষা দিবার আছে । ভারতের বাহিরের দেশগুলির সহিত আমাদের সংস্রব না রাখিলে চলিবে না। আমরা যে একসময়ে অপরের সহিত সংস্রব না রাখিবার কথা ভাবিয়ছিলাম, তাহা শুধু আমাদের নিবুদ্ধিতা, আর তাহারই শাস্তিস্বরূপ আমরা সহস্ৰ বংসর যাবৎ দাসত্বশৃঙ্খলে বদ্ধ রহিয়াছি। আমরা যে অন্যান্ত জাতির সহিত আমাদের আদর্শ তুলনা করিবার জন্য বিদেশে যাই নাই, আমরা যে জগতের গতি লক্ষ্য করিয়া চলিতে শিখি নাই, ইহাই ভারতীয় মনের ১ মনুসংহিতা, ২/২৩৮