পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S q8 স্বামীজীর বাণী ও রচনা আছে, তাহার কিছু হইবার আশা আছে, সে মৃত নহে। কিন্তু যদি কুসংস্কার ঢোকে, তবে মাথা একেবারে যায়, মস্তিষ্ক দুর্বল হইয়া পড়ে ; পতনের ভাব তাহাকে আচ্ছন্ন করিয়াছে। এই দুইটিই পরিত্যাগ করিতে হইবে । আমরা চাই নিভীক সাহসী লোক, আমরা চাই—রক্ত তাজা হউক, স্বায়ু সতেজ হউক, পেশী লৌহদৃঢ় হউক। মস্তিষ্ককে দুর্বল করে—এমন ভাবের দরকার নাই। সেগুলি পরিত্যাগ কর । সর্বপ্রকার রহস্যের দিকে ঝোক ত্যাগ কর । ধর্মে কোন গুপ্তভাব নাই । বেদান্ত বা বেদসংহিতা বা পুরাণে কি কোন গুপ্তভাব আছে ? প্রাচীন ঋষিগণ তাহাদের ধর্মপ্রচারের জন্য কোথাও কি গুপ্তসমিতি স্থাপন করিয়াছিলেন ? তাহাদের আবিষ্কৃত মহান সত্যসমূহ সমগ্র পৃথিবীতে দিবার জন্য তাহারা কি হাত-সাফাই কৌশল প্রভৃতি অবলম্বন করিয়াছিলেন— ইহা কোথাও লিপিবদ্ধ দেখিয়াছ কি ? গুপ্তভাব লইয়া নাড়াচাড়া ও কুসংস্কার সর্বদাই দুর্বলতার চিহ্ন, উহা সর্বদাই অবনতি ও মৃত্যুর লক্ষণ । অতএব ঐগুলি হইতে সাবধান হও, তেজম্বী হও, নিজের পায়ের উপর দাড়াও । সংসারে অনেক অদ্ভুত ব্যাপার আছে। প্রকৃতি সম্বন্ধে আমাদের ধারণা যতদূর, সেই হিসাবে উহাদিগকে অতিপ্রাকুত বলিতে পারি, কিন্তু উহাদের কোনটি গুপ্ত নহে । ধর্মের সত্যসমূহ গুপ্ত অথবা উহারা হিমালয়ের শিখরে অবস্থিত গুপ্তসমিতিগুলির একচেটিয়া সম্পত্তি-এ-কথা ভারতভূমিতে কখনই প্রচারিত হয় নাই । আমি হিমালয়ে গিয়াছিলাম, তোমরা যাও নাই। তোমাদের দেশ হইতে উহা শত শত মাইল দূরে। আমি একজন সন্ন্যাসী, গত চতুর্দশ বৎসর যাবৎ পদব্রজে চারিদিকে ভ্রমণ করিতেছি, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি—এইরূপ গুপ্তসমিতি কোথাও নাই। এই-সকল কুসংস্কারের পিছনে ছুটিও না । তোমাদের এবৃঃ তোমাদের সমগ্র জাতির পক্ষে বরং ঘোর নাস্তিক হওয়া ভাল, কারণ নাস্তিক হইলে অন্ততঃ তোমাদের একটু তেজ থাকিবে, কিন্তু এইরূপ" কুসংস্কারসম্পন্ন হওয়া অবনতি ও মৃত্যুস্বরূপ । সতেজ-মস্তিষ্ক ব্যক্তিগণ এইসকল কুসংস্কার লইয়া তাহাদের সময় কাটায়, ঘোরতর কুসংস্কারসমূহের রূপক ব্যাখ্যা করিয়া সময় নষ্ট করে — ইহা সমগ্র মানবজাতির পক্ষে ঘোরতর লজ্জার বিষয় । সাহসী হও, সকল বিষয় ব্যাখ্যা করিবার চেষ্টা করিও না । প্রকৃত কথা এই যে, আমাদের অনেক কুসংস্কার অাছে, আমাদের শরীরে অনেক কালো দাগ—অনেক ক্ষত আছে, ঐগুলিকে একেবারে তুলিয়া, ফেলিতে হইবে,