পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

➢ ግጬ স্বামীজীর বাণী ও রচনা বিপদ অবশুম্ভাবী। কেবল আমাদের ধর্মই কোন ব্যক্তিবিশেষ বা ব্যক্তিসমূহের জীবনের সহিত অচ্ছেদ্যভাবে জডিত নহে, উহা তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত । অপর দিকে আবার উহাতে লক্ষ লক্ষ অবতার ও মহাপুরুষের স্থান হইতে পারে । নূতন অবতার বা নূতন মহাপুরুষেরও আমাদের ধর্মে স্থান হইতে পারে, কিন্তু তাহাদের প্রত্যেককেই সেই তত্ত্বসমূহের জীবন্ত উদাহরণস্বরূপ হইতে হইবে— এইটি ভুলিলে চলিবে না। আমাদের ধর্মের এই তত্ত্বগুলি অবিকৃতভাবে রহিয়াছে আর এইগুলি যাহাতে কালে মলিন হইয়া না পড়ে, সেজন্য আমাদের সকলকে সারা জীবন চেষ্টা করিতে হইবে। আশ্চর্যের বিষয়, আমাদের ঘোর জাতীয় অবনতি ঘটিলেও বেদান্তের এই তত্ত্বগুলি কখনই মলিন হয় নাই । অতি দুষ্ট ব্যক্তিও ঐগুলি দূষিত করিতে সাহসী হয় নাই। আমাদের শাস্ত্রসমূহ পৃথিবীর মধ্যে অন্যান্য শাস্ত্র অপেক্ষ উত্তমভাবে রক্ষিত হইয়াছে। অন্যান্য শাস্ত্রের সহিত তুলনায় উহাতে প্রক্ষিপ্ত অংশ, মূলের বিকৃতি অথবা ভাবের বিপর্যয় নাই বলিলেই হয়। প্রথমেও যেমন ছিল, ঠিক সেই ভাবেই উহ! রহিয়াছে এবং মানুষের মনকে সেই আদর্শের দিকে পরিচালিত করিতেছে। বিভিন্ন ভাৰ্যকার উহার ভাষা করিয়াছেন, অনেক মহান আচার্য উহা প্রচার করিয়াছেন এবং উহাদের উপর ভিত্তি করিয়া সম্প্রদায় স্থাপন করিয়াছেন, আর তোমরা দেখিবে এই বেদগ্রন্থে এমন অনেক তত্ত্ব আছে, যেগুলি আপাতদৃষ্টিতে বিরোধী বলিয়া প্রতীত হয়। কতকগুলি শ্লোক সম্পূর্ণ দ্বৈতবাদাত্মক, অপরগুলি আবার সম্পূর্ণ অদ্বৈতভাবদ্যোতক। দ্বৈতবাদী ভাৰ্যকার দ্বৈতবাদ ছাড়া আর কিছুই বুঝিতে পারেন না, সুতরাং তিনি মদ্বৈত শ্লোকগুলি একেবারে চাপা দিয়া যাইতে চান । দ্বৈতবাদী ধর্মাচার্য ও পুরোহিতগণ সকলেই দ্বৈতভাবে উহুদের ব্যাখ্যা করিতে চান। অদ্বৈতবাদী ভাৰ্যকারগণও দ্বৈত শ্লোকগুলিকে সেইরূপ অদ্বৈতপক্ষে ব্যাখ্যা করিবার চেষ্টা করেন । কিন্তু ইহা তে বেদের দোষ নহে । সমগ্র বেদই দ্বৈতভাবের কথা বলিতেছে, এটি প্রমাণ করিবার চেষ্টা করা মূৰ্বোচিত কার্য। আবার সমগ্র বেদ অদ্বৈতভাবসমর্থক, ইহা প্রমাণ করিবার চেষ্টাও সেইরূপ মূখতা। বেদে দ্বৈত অদ্বৈত দুই-ই আছে। আমরা নূতন নূতন ভাবের আলোকে ইহা আজকাল অপেক্ষাকৃত ভালভাবে বুঝিতে পারিতেছি। এই সকল বিভিন্ন সিদ্ধাস্ত ও ধারণার দ্বারা পরিশেষে এই চরম সিদ্ধাস্তে উপনীত হওয়া যায় যে, মনের ক্রমোন্নতির জন্যই এই-সব মতের প্রয়োজন আর সেজন্যই বেদ