পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমাদের উপস্থিত কর্তব্য - » ፃ ፄ এরূপ উপদেশ দিয়াছেন । সমগ্র মানবজাতির প্রতি কৃপাপরবশ হইয়া বেদ সেই উচ্চতম লক্ষ্যে পৌছিবার বিভিন্ন সোপান দেখাইয়াছেন। সেগুলি যে পরস্পরবিরোধী, তাহা নহে ; শিশুদিগকে প্রতারিত করিবার জন্য বেদ ঐ-সকল বৃথা বাক্য প্রয়োগ করেন নাই । উহাদের প্রয়োজন আছে ; শুধু শিশুদের জন্য নহে, অনেক বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্যও বটে। যতদিন আমাদের শরীর আছে, যতদিন এই শরীরকে আত্মা বলিয়া ভ্রম হইতেছে, যতদিন আমরা পঞ্চেন্দ্রিয়াবদ্ধ, যতদিন আমরা এই স্কুলজগৎ দেখিতেছি, ততদিন আমাদিগকে ব্যক্তি-ঈশ্বর বা সগুণ ঈশ্বর স্বীকার করিতেই হইবে । কারণ মহামনীষী রামানুজ প্রমাণ করিয়াছেন : ঈশ্বর, জীব, জগৎ—এই তিনটির মধ্যে একটি স্বীকার করিলে অপর দুটিও স্বীকার করিতেই হইবে। ইহা পরিহার করিবার উপায় নাই। স্বতরাং যতদিন তোমরা বাহঁ জগৎ দেখিতেছ, ততদিন জীবাত্মা ও ঈশ্বর অস্বীকার করা ঘোর বাতুলতা। তবে মহাপুরুষগণের জীবনে কখন কখন এমন সময় আসিতে পারে, যখন জীবাত্মা তাহার সমুদয় বন্ধন অতিক্রম করিয়া প্রকৃতির পারে চলিয়া যায়—সেই সর্বাতীত প্রদেশে চলিয়া যায়, যাহার সম্বন্ধে শ্রুতি বলিয়াছেন : ‘যতো বাচো নিবর্তন্তে অপ্রাপ্য মনসা সহ।’ ‘ন তন্ত্র চক্ষুর্গচ্ছতি ন বাগ, গচ্ছতি নো মনঃ ” 'নাহং মন্যে স্ববেদেতি নো ন বেদেতি বেদ চ ’ —মনের সহিত বাক্য যাহাকে না পাইয়া ফিরিয়া আসে।—সেখানে চক্ষুও যায় না, বাক্যও যায় না, মনও যায় না –আমি তাহাকে জানি, ইহা মনে করি না ; জানি না, ইহাও মনে করি না। ’ © * তখনই জীবাত্মা সমুদয় বন্ধন অতিক্রম করে ; তখনই, কেবল তখনই তাহার হৃদয়ে অদ্বৈতবাদের মূলতত্ত্ব—আমি ও সমগ্র জগৎ এক, আমি ও ব্রহ্ম এক- এইভাব উদিত হয় । আর শুদ্ধ জ্ঞান ও দর্শন দ্বারাই এই সিদ্ধাস্ত যে লব্ধ হয়, তাহা নহে ; প্রেমবলৈও আমরা ইহার কতকটা আভাস পাইতে পারি। ভাগবতে পড়িয়াছ, ভৈত্তি উপ. ২f৯ ; কেন উপ, ১৩ ; কেন উপ, ২২ tー> ミ