পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>b>。 স্বামীজীর বাণী ও রচনা হে ভারতসস্তানগণ, আমি তোমাদিগকে আজ কতকগুলি কাজের কথ} বলিতে আসিয়াছি ; ভারতভূমির পুর্ব গৌরব স্মরণ করাইয়া দিবার উদ্দেশু— তোমাদিগকে প্রকৃত কার্যের পথে আহবান করা ব্যতীত আর কিছু নহে। লোকে আমাকে অনেকবার বলিয়াছে, কেবল পুর্বগৌরব-স্মরণে মনের অবনতি হয়, উহাতে কোন ফল হয় না, অতএব আমাদিগকে ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া কার্য করিতে হইবে । সত্য কথা ; কিন্তু ইহাও বুঝিতে হইবে, অতীতের গর্ভেই ভবিষ্যতের জন্ম। অতএব যতদূর পারো অতীতের দিকে তাকাও, পশ্চাতে যে অনস্ত নির্ঝরিণী প্রবাহিত, প্রাণ ভরিয়া অকণ্ঠ তাহার জল পান কর, তারপর সম্মুখ-প্রসারিত দৃষ্টি লইয়া অগ্রসর হও এবং ভারত প্রাচীনকালে যতদূর উচ্চ গৌরবশিখরে আরূঢ় ছিল, তাহাকে তদপেক্ষ উচ্চত্র উজ্জ্বলতর, মহত্তর, অধিকতর মহিমামণ্ডিত করিবার চেষ্টা কর । আমাদের পূর্বপুরুষগণ মহাপুরুষ ছিলেন, আমাদিগকে প্রথমেই ইহা স্মরণ করিতে হইবে । প্রথমেই জানিতে হইবে, আমরা কি উপাদানে গঠিত, কোন রক্ত আমাদের ধমনীতে বহিতেছে। তারপর সেই পুর্বপুরুষগণ হইতে প্রাপ্ত শোণিতে বিশ্বাসী হইয়া, তাহদের সেই অতীত কার্যে বিশ্বাসী হইয়া, সেই বিশ্বাসবলে অতীত মহত্ত্বের চেতনা হইতেই পূর্বে যাহা ছিল, তাহা অপেক্ষাও মহত্তর নূতন ভারত গঠন করিতে হইবে। অবশু মাঝে মাঝে এখানে অবনতির যুগ আসিয়াছে। আমি উহা বড় ধর্তব্যের মধ্যে আনি না ; আমরা সকলেই সে কথা জানি—ঐ অবনতিরও প্রয়োজন ছিল। এক প্রকাও মহীরুহ হইতে সুন্দর স্বপক ফল জন্মিল, ফলটি মাটিতে পড়িয়া পচিল, ত্বাহা হইতে আবার অঙ্কুর জন্মিয়া হয়তো প্রথম বৃক্ষ অপেক্ষা মহত্তর বৃক্ষের উদ্ভব হইল। এইরূপে যে অবনতি-যুগের মধ্য দিয়া আমাদিগকে আসিতে হইয়াছে, তাহারও প্রয়োজনীয়তা ছিল । সেই অবনতি হইতেই ভাবী ভারতের অভু্যদয় হইতেছে। এখনই' উহার অঙ্কুর দেখা যাইতেছে, উহার নব পল্লব বাহির হইয়াছে—এক মহান প্রকাও উর্ধ্বমূলম বৃক্ষ উদগত হইতে আরম্ভ হইয়াছে, আর আমি আজ তাহারই সম্বন্ধে তোমাদিগকে বলিতে অগ্রসর হইয়াছি। অন্যান্ত দেশের সমস্তাসমূহ অপেক্ষ এদেশের সমস্ত জটিলতর, গুরুতর। জাতির অবাস্তর বিভাগ, ধর্ম, ভাষা, শাসনপ্রণালী—এই সমুদয় লইয়াই একটি জাতি গঠিত। যুদি একটি একটি করিয়া জাতি লইয়। এই জাতির সহিত