পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামীজীর বাণী ও রচনা ويtr * মন্দিরের মতো দাক্ষিণাত্যের অনেক প্রাচীন মন্দির তোমাদিগকে অধিকতর শিক্ষা দিতে পারে, তোমাদের জাতির ইতিহাস সম্বন্ধে গভীরতর অন্তদৃষ্টি দিতে পারে। লক্ষ্য করিয়া দেখ, ঐ মন্দির শত শত আক্রমণের ও শত শত পুনরভু্যদয়ের চিহ্ন ধারণ করিয়া আছে—বার বার নষ্ট হইতেছে, আবার সেই ধ্বংসাবশেষ হইতে উত্থিত হইয়া, নৃতন জীবনলাভ করিয়া পুর্বেরই মতো অচল অটলভাবে বিরাজ করিতেছে । t সুতরাং এখানেই-—এই ধর্মেই আমাদের জাতীয় মন, জাতীয় প্রাণপ্রবাহ দেখিতে পাইবে । ধর্ম অনুসরণ কর, তোমর গৌরবান্বিত হইবে । ধর্ম পরিত্যাগ কর, তোমাদের মৃত্যু নিশ্চয়। এই জাতীয় জীবন-প্রবাহের বিরুদ্ধে যাইতে চেষ্টা করিলে তাহার একমাত্র পরিণাম হইবে “বিনাশ’-—আমি অবশ্য এ-কথা বলিতেছি না যে, আর কিছুর প্রয়োজন নাই । আমি এ-কথা বলিতেছি না যে, রাজনীতিক বা সামাজিক উন্নতিব কোন প্রয়োজন নাই ; আমার এইটুকু বক্তব্য—আর আমার ইচ্ছা, তোমরা ইহা ভুলিও না যে ঐগুলি গৌণমাত্র, ধর্মই মুখ্য। ভারতবাসী প্রথম চায় ধর্ম, তারপর অন্যান্য বস্তু। ঐ ধর্মভাবকে বিশেষরূপে জাগাইতে হইবে । কিরূপে উহা সাধিত হইবে ? আমি তোমাদের নিকট আমার সমুদয় কার্যপ্রণালী বলিব। আমেরিক। যাইবার জন্য মাদ্রাজ ছাড়িবার অনেক বৎসর পুর্ব হইতেই আমার মনে এই সঙ্কল্পগুলি ছিল, এই ভাব প্রচার করিবার জন্যই আমি আমেরিকা ও ইংলণ্ডে গিয়াছিলাম। ধর্মমহাসভা প্রভৃতির জন্য আমার বড় ভাবনা হয় নাই—উহা শুধু একটি সুযোগুরূপে উপস্থিত হইয়াছিল। আমার মনে যে সঙ্কল্প ঘুরিতেছিল, তাহাই আমাকে সমগ্র পৃথিবীতে ঘুরাইয়াছে। আমার সঙ্কল্প এই : প্রথমতঃ আমাদের শাস্ত্রভাণ্ডারে সঞ্চিত, মঠ ও অরণ্যে গুপ্তভাবে রক্ষিত, অতি অল্প লোকের দ্বারা অধিকৃত ধর্মরত্বগুলিকে প্রকাশ্রে বাহির করা, ঐ শাস্ত্রনিবন্ধ তত্ত্বগুলিকে—শুধু যাহাদের হাতে গুপ্তভাবে রহিয়াছে, তাহাদের নিকট হইতেই বাহির করিলে হইবে না, উহা অপেক্ষাও দুর্ভেদ্য পেটিকায় অর্থাৎ যে সংস্কৃত ভাষায় ঐ তত্ত্বগুলি রক্ষিত, সেই সংস্কৃত শব্দের শত শত শতাব্দীর কঠিন আবরণ হইতে বাহির করিতে হইবে । এক কথায়-আমি ঐ তত্ত্বগুলিকে সর্বসাধারণের বোধগম্য করিতে চাই ; আমি চাই ঐ ভাবগুলি সর্বসাধারণের—প্রত্যেক ভারতবাসীর সম্পত্তি হউক, তা সে সংস্কৃত ভাষা জামুক